কেরালায় রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের বিতর্কের মাঝেই পাশের রাজ্য তামিলনাড়ুতেও শাসকদলের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেন রাজ্যপাল আর এন রবি। রবিবার ডিএমকে এবং তার সহযোগী দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে রাজ্যপালের ইস্তফার দাবি জানানো হয়েছে। সম্প্রতি ‘সনাতন ধর্ম এবং ধর্মনিরপেক্ষতা’ প্রসঙ্গে রাজ্যপালের মন্তব্যে আপত্তি জানিয়েছে রাজ্যের শাসক জোট। তাদের বক্তব্য অনুসারে, রাজ্যপালের মন্তব্য ‘বিজেপি নেতৃত্বকে খুশি করতে’। যা সংবিধানের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত। তিনি পদত্যাগ করুন।
রবিবার এক যৌথ বিবৃতিতে ডিএমকে-র টি আর বালু, কংগ্রেসের কে এস আলাগিরি, ভিসিকে-র থোল থিরুমাভালাভান সহ ১১টি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব রাজ্যপালের মন্তব্যে আপত্তি জানিয়েছেন। যে মন্তব্যে রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, ‘পৃথিবীর প্রতিটি দেশই একটি নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর নির্ভর করে এবং ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেন আর এন রবি। যার নিয়োগ নিয়ে ডিএমকে সহ শাসক জোটের সমস্ত নেতা আপত্তি জানিয়েছিলেন। রাজ্যের শাসকজোট জানিয়েছিল, বিজেপির রাজনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রবিকে রাজ্যপাল হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা আরও জানিয়েছিলেন, সনাতন ধর্ম, দ্রাবিড়বাদ, আর্যবাদ, তফশিলি জাতি এবং তিরুককুরাল সম্পর্কে রবির বিবৃতি ‘অযৌক্তিক এবং বিপজ্জনক’।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের বারংবার আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যপাল রবি বেশ কিছুদিন ধরে বলে চলেছেন, সনাতন ধর্ম অনেকদিন ধরেই দেশকে পথ দেখিয়ে আসছে।
এদিনের যৌথ বিবৃতিতে রাজ্যের শাসকজোটের বিভিন্ন নেতৃত্ব জানিয়েছেন, আমরা মনে করি রাজ্যপাল এই ধরণের বিবৃতি দেবার সময় নিজেকে ভারতীয় সাংসদ অথবা সুপ্রিম কোর্ট কিংবা ভারতের রাষ্ট্রপতি হিসেবে কল্পনা করেন। এটাও বলা যেতে পারে, তিনি সম্ভবত নিজেকে ভারতের সম্রাট হিসেবে কল্পনা করেন।
প্রসঙ্গত, রবি সম্প্রতি জানিয়েছেন, ‘ভারত বিশ্বের অন্যান্য অংশের মত একটি ধর্মের ওপর নির্ভরশীল’। তাঁর এই মন্তব্য প্রসঙ্গে শাসক জোটের নেতৃত্বের বক্তব্য, রাজ্যপাল বিশ্ব ইতিহাস অথবা ভারতের সংবিধান জানেন না। কারণ সংবিধান সমস্ত ধর্মের নাগরিকদের সমান অধিকার দেয়।
তাঁরা আরও বলেন, রাজ্যপালের ভারতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার বিরুদ্ধে কথা বলা বন্ধ করা উচিৎ। ভারত ‘গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ’ দেশ। আমরা তাঁর বক্তব্যে গুরুত্ব দিতে বাধ্য হচ্ছি, কারণ তিনি রাজ্যপাল। রাজ্যপাল রবি যদি আরও কোনো বড়ো পদ পাওয়ার জন্য বিজেপিকে খুশি করতে এই ধরণের বিবৃতি দিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে তাঁর আগে রাজ্যপালের পদ থেকে পদত্যাগ করা উচিৎ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন