ভয় দেখিয়ে গরিব হিন্দু কৃষকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ২০০ একর জমি। তাও আবার মুসলিম সংস্থার নাম করে। শনিবার, এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে মধ্যপ্রদেশে।
জানা যাচ্ছে, ২০০০ সালে ‘তানজিম-ই-জারখেজ’ নামে উর্দু নামাঙ্কিত একটি হিন্দু খারগন শহরের উপকণ্ঠে থাকা গরীব হিন্দু কৃষকদের কাছে থেকে স্বল্প মূল্যে জমি কেনে। জমি কেনার সময় ওই চাষীদের বলা হয়েছিল, ওই পাথুরে জমি পুরোটাই তারা কিনে নিচ্ছেন কারণ ওই অঞ্চলে খুব শীঘ্রই গড়ে উঠবে একটি মুসলিম কমিউনিটি।
কিন্তু ঘটনার ২২ বছর পরও সেখানে কোনো কমিউনিটি গড়ে না ওঠায় ওই কৃষকরা বুঝতে পারেন যে মিথ্যে বলে ভয় দেখিয়ে মূলত তাদের জমি দখল করা হয়েছে। তাই ঘটনার বিবরণ দিয়ে তারা অভিযোগ দায়ের করে থানায়।
তদন্তে জানা গেছে, যারা জমি বিক্রি করেছিলেন তাঁদের বেশিরভাগই ছিলেন ক্ষুদ্র চাষী। তারা এখন দাবি তুলছেন যে অন্যায়ভাবে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
শুধু তাই নয়, ২০০৭ সালে সংস্থাটির নাম ‘তানজিম-ই-জারখেজ’ থেকে পরিবর্তন করে ‘অধ্যাপক পিসি মহাজন ফাউন্ডেশন’ রাখা হয়েছে। এই ট্রাস্ট্রের ডিরেক্টর রবি মহাজন বলেন, ‘আমরা শুধুমাত্র জমিটিকে ভালো কাজে ব্যবহার করতে চেয়েছি। আমরা কারোর সাথে কোনো প্রতারণা করিনি।’
তবে, নন্দ কিশোর কুশাওয়ালা নামে এক কৃষক জানিয়েছেন, ২০০৪ সালে জাকির নামে এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ওই ব্যক্তি জানান, এখানে গরুদের কসাইখানা তৈরি হবে। তাই, মুসলিমদের স্বার্থে তিনি যেন জমি বিক্রি করেন। কিশোর কুশাওয়ালা জানিয়েছেন, জাকিরের কথায় বিশ্বাস করে পাঁচ একর জমি ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করে দেয়। এখন সে দেখছে জমি মূলত গোশালা তৈরির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। পড়ে থাকা অংশে কয়েকটি বাড়ি তৈরি হবে।
এদিকে জানা যাচ্ছে, ২০০০ সালে ‘তানজিম-এ-জারখেজ’ তৈরির পর তারা জাকির শেখ নামে এক ব্যক্তিকে ম্যানেজার নিয়োগ করে। একটি সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাকির জানিয়েছেন, এসবের কিছুই তিনি জানতেন না। তাঁর কথায়, ‘আমি ভেবেছিলাম সামাজিক কারণে কাজ করতে চায় সংগঠনটি। যদিও আমি কাউকে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করিনি।’
ট্রাস্টের মাথায় ছিলেন বিজেপি নেতা রঞ্জিত সিং ডান্ডির। আগে তিনি বজরং দলের কো-কনভেনার ছিলেন। ‘তানজিম-এ-জারখেজ’-এর নাম বদল নিয়ে তাঁর যুক্তি- নাম যদি ‘তানজিম-এ-জারখেজ’ হয়, তাতে ক্ষতি কী?
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ২০০ একরের মধ্যে ১৫০ একর জমিই ১১ টি সংস্থার থেকে নেওয়া। বাকি জমিগুলো ক্ষুদ্র চাষিদের থেকে নেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন