বিধানসভার অধিবেশনের বাধা সৃষ্টি করার অভিযোগে তেলেঙ্গানা বিধানসভার তিনজন বিজেপি বিধায়ককে সোমবার বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিন হাউস থেকে বরখাস্ত করা হল। স্পিকার পোচারাম শ্রীনিবাস রেড্ডি জানিয়েছেন, তিন বিজেপি বিধায়ককে অধিবেশনের বাকি অংশের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে। তিন বিজেপি বিধায়ক হলেন রাজা সিং, রঘুনন্দন রাও এবং ইটালা রাজেন্দর।
সোমবার অধিবেশন শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে, অর্থমন্ত্রী হরিশ রাওয়ের বাজেট বক্তৃতায় বার বার বাধা দিচ্ছিলেন এই তিন বিজেপি বিধায়ক। রাজ্যপালের প্রথাগত ভাষণ ছাড়াই বাজেট অধিবেশন শুরু করায় তিন বিজেপি বিধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন। কালো স্কার্ফ পরে এবং স্লোগান তুলে বিজেপি বিধায়করা হাউসের ওয়েলে ঢুকে পড়েন এবং বাজেট বক্তৃতার কপি ছিঁড়ে দেন।
স্পিকার বারবার তাঁদের আসনে ফেরার আবেদন করলেও তাতে কর্ণপাত করেননি তিন বিজেপি বিধায়ক। এরপরেই তিন বিজেপি বিধায়ককে পুরো অধিবেশনে সাসপেন্ড করার দাবিতে এক প্রস্তাব উত্থাপন করেন মন্ত্রী টি. শ্রীনিবাস। প্রস্তাবটি ধ্বনিভোটে গৃহীত হয় এবং বিধায়কদের বরখাস্ত করা হয়।
বরখাস্তের প্রতিবাদে বিধানসভার প্রধান ফটকের সামনে বিক্ষোভে বসেন তিন বিজেপি বিধায়ক। তাদের অভিযোগ, টিআরএস সরকার বিরোধীদের কণ্ঠকে দমন করতে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবলম্বন করছে। তাদের আরও অভিযোগ, রাজ্যপালের ভাষণ বাতিল করে সরকার সাংবিধানিক পদে রাজ্যপালকে অপমান করেছেন। সরকার অবশ্য তাদের পদক্ষেপের সমর্থনে জানিয়েছে এই অধিবেশন নতুন কোনো অধিবেশন নয়। আগের অধিবেশনের অংশ।
তেলেঙ্গানার রাজ্যপাল শ্রীমতী তামিলিসাই সৌন্দররাজনও সরকারের এই সিদ্ধান্তে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, "পাঁচ মাস পর বিধানসভায় অধিবেশন হচ্ছে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে, যখন এত দীর্ঘ বিরতির পরে অধিবেশন ডাকা হয়, তখন তা নতুন অধিবেশন হিসেবেই ধরা হয়। কিন্তু সরকার আগের অধিবেশনটিকেই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।" সরকার তাঁর বক্তব্য বাতিল করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল।
যদিও তিনি জানিয়েছেন, বাজেট উপস্থাপনের জন্য তিনি তাঁর সুপারিশ দিয়েছেন। কারণ, তাঁর প্রাথমিক উদ্দেশ্য জনগণের কল্যাণ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, "তবে, আমি সাংবিধানিক রীতিকে সম্মান জানিয়ে এবং রাজনৈতিক বিবেচনার বাইরে গিয়ে, কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্কের ধারা বজায় রেখে, আর্থিক বিল প্রবর্তনের জন্য আমার সম্মতি জানিয়েছি। আমার সম্মতি দেওয়ার জন্য আমার সময় নেওয়ার স্বাধীনতা ছিল। কিন্তু জনগণের কল্যাণ জড়িত তা ভালোভাবে জেনে এবং জনগণের কল্যাণকে প্রাধান্য দিয়ে, আমি কোনো সময়ের ব্যবধান ছাড়াই আমার সম্মতি দিয়েছিলাম।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন