বিজেপি সরকার দেশের ক্ষমতায় আসীন হবার পর বিভিন্ন রাজ্যের নাম পরিবর্তন একটি রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজেপির সাথে নাম পরিবর্তনের ঘটনা ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। এবার এই তালিকাভুক্ত হল হায়দ্রাবাদ। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, হায়দ্রাবাদের নয়া নাম হবে ‘ভাগ্যনগর’। এই ঘটনাকে কটাক্ষ করেছেন তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির নেতা তথা মন্ত্রী কে.টি রামা রাও।
গত শনিবার (২রা জুলাই) বিজেপির জাতীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে দুই দিনের জন্য তেলেঙ্গানার রাজধানী হায়দ্রাবাদে দলীয় সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও হয়েছে। সেদিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ বিজেপি নেতারা এবং শাসকদলের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীগণ। সেই সভাতেই প্রধানমন্ত্রী মোদী, হায়দ্রাবাদকে 'ভাগ্যনগর' বলে সম্বোধন করেছেন।
সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রী মোদী সেদিনের সভায় উল্লেখ করেছেন, “হায়দ্রাবাদই হল ভাগ্যনগর, এই নতুন নাম খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলকে উদ্ধৃত করে বলেন, তিনি একটি ঐক্যবদ্ধ ভারতের ভিত্তি রেখেছিলেন। যা ‘এক ভারত’ নামে পরিচিত। এখন তাঁর এই স্বপ্নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব বিজেপিরই। দল সেই পথেই হাঁটছে। এই প্রসঙ্গে, রবিবার বিজেপি নেতা দীনেশ শর্মা বলেছেন, “প্রাচীনকাল থেকেই, মা ভাগ্যলক্ষ্মীর ভূমিকে ভাগ্যনগর বলা হয়। ভাগ্যনগরের ভাগ্য পরিবর্তন হতে চলেছে বিজেপির হাত ধরে। এরফলে হায়দ্রাবাদের উন্নতিসাধন হবে।
ইতিপূর্বে, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি নেতা রঘুবর দাস বলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলেই শহরের নাম পরিবর্তন করে 'ভাগ্যনগর' করা হবে। ২০২০ সালেও হায়দরাবাদ পুরসভার ভোটে প্রচারে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ, হায়দরাবাদকে ‘ভাগ্যনগরে’ পরিণত করতে মানুষকে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বলেছেন, রাজ্যের যুবকরা ত্যাগ স্বীকার করে তেলেঙ্গানা গঠন করেছে, কিন্তু গত আট বছরে, TRS সরকার জনগণের প্রত্যাশাভঙ্গ করেছে । তাঁরা চাই বিজেপি সরকার।
উল্লেখ্য, এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দেন, “বিজেপি যখন এই রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে, তখন মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রিসভার সঙ্গে আলোচনা করে নাম পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
আগামী বছরই দক্ষিণাঞ্চলে ভোট হবে। ভোটের সামনে এই ধরণের ঘটনাকে ভালো চোখে দেখছেন না ক্ষমতাসীন তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির নেতা তথা রাজ্যের শিল্প-বাণিজ্য ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী কে.টি রামা রাও। তিনি এই ঘটনার পর ট্যুইট করে জানিয়েছেন, “আহমেদাবাদের নাম পরিবর্তন করে আদানিবাদ করা হচ্ছে না কেন? আসলে কারা এই জুমলাজীবী?” এই ট্যুইটের পর চুপ থাকেনি তেলেঙ্গানা বিজেপিও। তেলেঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতির (TRS) ও বিজেপি বাগবিতণ্ডায় জড়িয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন