কিছুদিন আগেই হরিয়ানার অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের এক অধ্যাপকের গবেষণাপত্রকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল ব্যাপক বিতর্ক। ওই গবেষণাপত্রে বিজেপি ও মোদী জমানায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ভোট প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছিলেন অধ্যাপক সব্যসাচী দাস।
অধ্যাপক দাসের গবেষণাপত্র ঘিরে রাজনৈতিক সংঘাতে জড়িয়েছিল বিজেপি ও কংগ্রেস। অধ্যাপকের সমালোচনা করেছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। ঘটনার সত্যতা জানতে চেয়ে ট্যুইট করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। এবার ওই অধ্যাপকের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে খোলা চিঠি দিল বিশ্ববিদ্যালয়েরই অর্থনীতি বিভাগ।
সম্প্রতি বিতর্কে জড়িয়ে হরিয়ানার অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দেন। কর্তৃপক্ষের তরফে সেই পদত্যাগপত্র ‘দ্রুত’ এবং খুব সহজেই গ্রহণ করে নেওয়া হয়। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডিকে খোলা চিঠি লিখে জানিয়েছে, “আমাদের সহকারী অধ্যাপক সব্যসাচী দাসের পদত্যাগপত্র এত তাড়াতাড়ি গ্রহণ করে নেওয়া আমাদের বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে। আমাদের বিভাগ, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা, অধ্যাপকরা এবং এই অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের শুভানুধ্যায়ীরা যে বিশ্বাস নিয়ে চলতাম, সেই বিশ্বাসকে ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”
ওই চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, “আমাদের সহকারী অধ্যাপক দাস অ্যাকাডেমিক প্র্যাকটিসের কোনওরকম স্বীকৃত নিয়ম লঙ্ঘন করেননি। অ্যাকাডেমিক রিসার্চ সাধারণভাবে সমকক্ষ পর্যালোচনার একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়। অধ্যাপকের সাম্প্রতিক গবেষণার যোগ্যতা নিয়ে তদন্ত করার জন্য এই প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির হস্তক্ষেপ প্রাতিষ্ঠানিক হস্তক্ষেপ, এটি অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা খর্ব করে। আমাদের গবেষকদের ভয়ের পরিস্থিতিতে কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। আমরা কড়া ভাষায় এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও অর্থনীতি বিভাগের সদস্যরা গভর্নিং বডির তরফে করা আলাদা গবেষণার মূল্যায়নের অনুরোধে সায় দিয়ে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকছি।”
অশোক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের তরফে আরও বলা হয়েছে, “আমাদের এই অর্থনীতি বিভাগটি দেশের মধ্যে অন্যতম সেরা অর্থনীতি বিভাগগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। অনেক পরিশ্রম করে এই বিভাগটি শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের গভর্নিং বডির এইধরণের কার্যকলাপ এই বিভাগের অস্তিত্বের উপর হুমকি হিসেবে বর্তায়।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন