করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় ব্যর্থ কেন্দ্রের মোদি সরকার। প্রয়োজনীয় ওষুধ, অক্সিজেন, ভ্যাকসিনের অভাব নিয়ে সমালোচনায় সরব দেশবাসী। বিশ্বের কাছেও মুখ পুড়েছে ব্র্যান্ড মোদির। কিন্তু সেসব সমালোচনাকে গুরুত্ব না দিয়ে মোদি সরকার করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে সফল বলে প্রচার শুরু করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বৃহস্পতিবার গুজরাতে ন’টি অক্সিজেন প্লান্টের শিলান্যাস হয়। সেই অনুষ্ঠানে তিনি এমনই দাবি করেন। তাঁর এই দাবি নিয়ে যথারীতি উঠছে প্রশ্ন। দেশে এই মুহূর্তে দৈনিক সংক্রমণ প্রায় দেড় লক্ষ, দৈনিক মৃত্যু প্রায় তিন হাজার, দেশের বেশিরভাগ রাজ্যেই চলছে পূর্ণ বা আংশিক লকডাউন। পাশাপাশি করোনা ভাইরাস প্রায়ই চরিত্র পরিবর্তন করে ঘাতক রূপ ধারণ করেছে। তাতে আশঙ্কিত হয়ে পড়ছেন বিজ্ঞানীরাও। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর সেনাপতির এই দাবি নিয়ে স্বাভাবিক ভাবে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
করোনার প্রথম ঢেউ সামলে নেওয়া নিয়ে সরকার প্রচার করেছিল। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, তাতে দু’রকম সমস্যা তৈরি হয়। প্রথমত, পরবর্তী ধাক্কা সামলাতে যেভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রয়োজন ছিল, তা ব্যাহত হয় বা বলা যায় অনেক ক্ষেত্রে থমকে যায়। দ্বিতীয়ত, সরকারের অতি-উৎসাহী প্রচারে জনমানসেও ভুল বার্তা যায়। তার জের সামলাতে হয় দ্বিতীয় ঢেউয়ে। করোনার প্রথম ঢেউয়ে যেখানে দৈনিক সর্বাধিক সংক্রমণ এক লক্ষের নীচে ছিল, তা দ্বিতীয় ঢেউয়ে পেরিয়েছে চার লক্ষ। তাই বিশেষজ্ঞরা এত তাড়াতাড়ি জয় ঘোষণায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন।
অমিত শাহ বলেন, ‘অক্সিজেনের চাহিদা ১০ হাজার টন থেকে কমে ৩৫০০ টনে নেমে আসা প্রমাণ করছে, দেশে করোনার সংক্রমণ কমছে। নরেন্দ্র মোদির সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণেই সাফল্যের সঙ্গে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলাতে সক্ষম হয়েছে দেশ।’ তাঁর আরও দাবি, করোনা মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলিকে ভারত ধৈর্য ও পরিকল্পনার জোরে টেক্কা দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অনেকদিন ধরেই জানাচ্ছেন যে, বছরের শেষে করোনার তৃতীয় ঢেউ আরও ঘাতক রূপ নিতে পারে। তাতে মূলত ছোটদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন