ভারতের সবথেকে পিছিয়ে পড়া রাজ্য হলো বিহার। একটি রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে সংসদে একথা জানালো কেন্দ্র। কেন্দ্রের এই মন্তব্যে রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে কারণ বিহারে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপির জোট সরকার। বিহারে বিজেপির জোটসঙ্গী জেডি(ইউ)-এর এক সাংসদ রাজীব রঞ্জন সিং সংসদে বিহারের অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, নীতি আয়োগের ২০২০-২১ সালের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস রিপোর্ট অনুযায়ী বিহার হলো সবথেকে পিছিয়ে পড়া রাজ্য। যদি তাই হয়, তাহলে কিসের জন্য বিহার পিছিয়ে পড়ছে সেই কারণগুলো বলুন। বিহারকে বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার যে দীর্ঘদিনের দাবি রয়েছে, সেই বিষয়ে কেন্দ্র কিছু বিবেচনা করেছে কিনা, সেই বিষয়েও প্রশ্ন করেছেন তিনি।
জেডিইউ সাংসদের এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিং লিখিতভাবে জানান, নীতি আয়োগের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস রিপোর্টে বিহারের সম্মিলিত স্কোর (১০০ এর মধ্যে ৫২) সমস্ত রাজ্যের মধ্যে কম ছিল। রিপোর্টে ১১৫টি ইন্ডিকেটরসের ভিত্তিতে নম্বর দেওয়া হয়েছিল। দারিদ্র্যের হার অনেক বেশি, ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার সর্বনিম্ন এবং মোবাইল ও ইন্টারনেটের ব্যবহারে সবথেকে কম - বিহারের কম স্কোরের জন্য এই কারণগুলিকে দায়ী করেছেন মন্ত্রী।
তিনি জানিয়েছেন, "মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ (৩৩.৭৪ শতাংশ) দারিদ্র্য সীমার নীচে বসবাস করে। ৫২.৫ শতাংশ লোক বহুমাত্রিক দারিদ্র্যতার শিকার। মাত্র ১২.৩ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের হেলথ ইন্সুরেন্স রয়েছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে ৪২ শতাংশের স্বাভাবিক বিকাশ হয়নি, যা দেশের মোট সর্বোচ্চ। ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের মধ্যে স্বাক্ষরতার হার সর্বনিম্ন (৬৪.৭ শতাংশ)। বিহারে ১০০ জনের মধ্যে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন ৫০.৬৫ জন এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৩০.৯৯ জন।"
মন্ত্রীর এই জবাবকে হাতিয়ার করে বিহার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের সরকরকে কটাক্ষ করেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। তাঁর প্রশ্ন, ডবল ইঞ্জিনের সরকার থাকা সত্ত্বেও বিহার সমস্ত প্যারামিটারে খারাপ ফলাফল করছে কেন? প্রসঙ্গত, নীতি আয়োগের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস রিপোর্ট, ২০২১ অনুযায়ী সেরা রাজ্য হলো কেরল। এরপর রয়েছে হিমাচল প্রদেশ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, কর্ণাটক, উত্তরাখণ্ড।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন