কর্ণাটক বিমানবন্দর থেকে লন্ডন ফেরত পাঠানো হল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অধ্যাপক নীতাশা কল। অভিবাসন দপ্তর থেকে বলা হয়েছে দিল্লির নির্দেশেই লন্ডনে ফিরে যেতে হবে ওই অধ্যাপককে। সঙ্ঘের সমালোচক বলেই কি অধ্যাপককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, উঠছে প্রশ্ন। এই নিয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি কেন্দ্র।
কর্ণাটক সরকার আয়োজিত 'সংবিধান ও জাতীয় ঐক্য সম্মেলনে' যোগ দেওয়ার জন্য ভারতে এসেছিলেন লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক বিভাগের অধ্যাপক নীতাশা কল। কিন্তু কর্ণাটকের কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতেই তাঁকে বাধা দেয় আভিবাসন দপ্তর। পুরো ঘটনা নিজের এক্স হ্যান্ডেলে তুলে ধরেছেন ব্রিটিশ অধ্যাপক, যিনি এর আগে একাধিকবার বিভিন্ন নিবন্ধের মাধ্যমে মোদী সরকার ও আর.এস.এস-এর সমালোচনা করেছেন।
ওই অধ্যাপক লেখেন, আমাকে কোনো কারণ ছাড়াই বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছে। শুধু বলা হয় দিল্লির নির্দেশ আছে। আমার কাছে ওই অনুষ্ঠানের সমস্ত বৈধ নথি ছিল। সেই নথি দেখিয়েও লাভ হয়নি। আগাম কোনো বার্তাই দেওয়া হয়নি দিল্লির তরফ থেকে।
কর্ণাটক বিজেপির পক্ষ থেকে ব্রিটিশ অধ্যাপককে আমন্ত্রণ জানানো নিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি জানায়, কংগ্রেস পার্টি এমন এক ব্রিটিশ অধ্যাপককে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, যিনি পাকিস্তানিকে বিয়ে করেছেন। এক পাকিস্তানি, যিনি কিনা ভারতকে ভাঙতে চান, তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভারতীয় সংবিধানের অবমাননা করেছে কংগ্রেস।
বিজেপির তরফ থেকে আরও জানানো হয়, কর্ণাটকের মানুষের করের টাকা ব্যবহার করে ভারতের অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ণ করতে চায় কংগ্রেস। ভারতে অশান্তি ছড়াতে চাইছে এই দল। আমাদের নিরাপত্তা সংস্থাগুলিকে অসংখ্য ধন্যবাদ যে এমন একজন ভারত বিরোধী মানসিকতার ব্যক্তিকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
যদিও 'ভারত-বিরোধী' সহ সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ব্রিটিশ অধ্যাপক। তিনি লেখেন, সমস্ত কিছু মিথ্যা। আমি কোনো পাকিস্তানিকে বিয়ে করিনি। মুসলিম ধর্মও গ্রহণ করিনি। চীনের কোনও গুপ্তচর নই অথবা পশ্চিমাদের পুতুলও নই, জেহাদি নই, সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থনও করি না, ভারত বিরোধী নই। আসলে আমি একজন চিন্তাশীল নারী। সেই কারণেই অনেকে ভয় পান আমাকে।
পুরো ঘটনায় কর্ণাটকের মন্ত্রী এইচ সি মহাদেপ্পা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, এই ধরণের ঘটনা ঘটাই উচিত নয়। ভারতের কাছে লজ্জাজনক এবং বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সমান। কেন্দ্রের কাছে দ্রুত অভিযোগ জানাবেন বলেও তিনি দাবি করেছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন