মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ হওয়া নিয়ে লোকসভার সচিবালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চাইলো দেশের শীর্ষ আদালত। আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে সাংসদ পদ খারিজের কারণ জানাতে হবে লোকসভার সচিবালয়কে।
'ক্যাশ ফর কোয়ারি' অর্থাৎ টাকা দিয়ে প্রশ্ন কাণ্ডে সাংসদ পদ খারিজ হয় তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্রের। তারপরই তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছিলেন। সেই মতো ১১ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করলেন তৃণমূল নেত্রী। বুধবার সেই মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে। শুনানির পর আদালতের সিদ্ধান্ত নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন মহুয়া মৈত্র।
আদালতে মহুয়া মৈত্র অভিযোগ করেন, এথিক্স কমিটি তাঁর কোনো বক্তব্যই শোনেনি। কমিটি একতরফা ভাবে রিপোর্ট তৈরি করেছিল। মহুয়ার আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি জানান, সংসদে সাংসদদের সহকারী থাকেন। যাঁরা সাংসদের কাজ দেখা শোনা করেন। অনেক ক্ষেত্রে দরকার পড়ে সহকারীর সাথে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেয়ার করা। দর্শন হিরানন্দানি মহুয়ার সেক্রেটারি ছিলেন। তিনি যদি এখন সমস্ত বিষয় অস্বীকার করেন তাহলে মহুয়া মৈত্র কী করতে পারেন?
বিচারপতি সঞ্জীব খান্না পাল্টা প্রশ্ন করেন মহুয়া মৈত্রকে। তিনি বলেন, আপনি (মহুয়া মৈত্র) কি স্বীকার করছেন ওটিপি কাউকে দিয়েছিলেন? মহুয়া মৈত্রর তরফে তা স্বীকার করে জানানো হয় কাজের স্বার্থেই শেয়ার করতে হয়। এরপরই দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, আগামী দু'সপ্তাহের মধ্যে লোকসভার সচিবালয়কে মহুয়া মৈত্রের পদ খারিজের কারণ জানাতে হবে আদালতে। মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ মার্চ।
প্রসঙ্গত, ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানির কাছ থেকে উপঢৌকনের বিনিময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে লোকসভায় প্রশ্ন করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। সাংসদের লগইন আইডি ও পাসওয়ার্ডও দর্শনকে দিয়েছেন মহুয়া। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে মহুয়ার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছিলেন। লোকসভার এথিক্স কমিটিকে এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল।
এথিক্স কমিটি মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের সুপারিশ করে রিপোর্ট দেয়। গত ৮ ডিসেম্বর লোকসভায় সরকারিভাবে সেই রিপোর্ট পেশ করেছিল এথিক্স কমিটি। ৪৯৫ পাতার সেই রিপোর্ট পেশের কিছুক্ষণের মধ্যেই ধ্বনিভোটের মাধ্যমে মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ করেন লোকসভার স্পীকার ওম বিড়লা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন