মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকির খুনের ২৯ দিনের মাথায় এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত শিবকুমারকে গ্রেফতার করল মুম্বাই পুলিশ। রবিবার উত্তর প্রদেশের বহরাইচ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। মুম্বাই পুলিশের সঙ্গে এই গ্রেফতারিতে সহয়তা করেছে উত্তর প্রদেশের পুলিশও। বাবা সিদ্দিকি খুনে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও পলাতক দুই। খোঁজ চলছে তাদের।
১২ অক্টোবর বান্দ্রায় ছেলে জিশান সিদ্দিকির দফতরের বাইরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকির। তাঁকে গুলি করার জন্য ঘটনাস্থলে এসেছিল তিন আততায়ী। দু’জনকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হলেও পালিয়ে যায় শিবকুমার। তদন্তকারীদের দাবি, বাবা সিদ্দিকিকে প্রাণঘাতী গুলিটা করেছিল শিবকুমারই। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর থেকে শিবকুমারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল লরেন্স বিশ্নোইয়ের ভাই আনমোল বিশ্নোইয়ের। তাঁকে নেপালে পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল।
রবিবার শিবকুমারের সঙ্গে আরও চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, এরা প্রত্যেকেই অভিযুক্তকে পালাতে সাহায্য করেছিল। পাশাপাশি বাবা সিদ্দিকি খুনের মূল চক্রান্তের সঙ্গেও জড়িত এরা। পুলিশ সূত্রে খবর, বাবা সিদ্দিকিকে খুনের জন্য দিনের পর দিন মুম্বাইতে মহড়া দেয় তারা। ১২ অক্টোবরকে বেছে নেওয়া হয় কারণ ওই দিন দশেরা ছিল । উৎসবের দিনে পালাতে সুবিধা হবে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে প্রথমে নিজের ফোনটি ভেঙে ফেলে শিবকুমার। এরপর যায় পুণে। সেখান থেকে ঝাঁসি হয়ে লখনউ। এরপর উত্তর প্রদেশের বহরাইচে গাঁ ঢাকা দেয় সে। সেখান থেকেই নেপাল পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। ২৯ দিন আনমোলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল শিবকুমার। আর এক ধৃত ধরমরাজের দাদা অনুরাগ কাশ্যপও এই কাজে তাকে সাহায্য করেছিলেন। তাকে রবিবার শিবকুমারের সঙ্গেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এই ঘটনায় উত্তরপ্রদেশের এসটিএফের ডেপুটি এসপি প্রমেশ শুক্ল বলেন, ‘আনমোল বিশ্নোইয়ের সঙ্গে শিবকুমারের যোগাযোগ ছিল। স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে প্রায়ই তাঁদের কথা হত। খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য শিবকুমার এবং তার সহযোগীদের দেওয়া হয়েছিল আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, একাধিক সিম কার্ড এবং মোবাইল ফোন। শুভম লোঙ্কার এবং মহম্মদ জিশান আখতার নামের দুজন তাদের এই জিনিসগুলি দিয়েছিল।’
যদিও এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ শুভম লোঙ্কার এবং জিশান আখতার। খোঁজ চলছে তাদের। পুলিশের দাবি, সিদ্দিকি খুনের চক্রান্তের নেপথ্যে অন্যতম মূল ব্যক্তি শুভম এবং জিশান। তদন্তকারীদের দাবি, জিশানই শুটারদের জন্য টাকা পাঠিয়েছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন