হরিদ্বারে কাঁওয়ার যাত্রা পথে দুটি মসজিদ ও একটি মাজারের সামনে সাদা চাদর দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। এই নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা শুরু হয়। চাপে পড়ে সেই চাদর সরিয়ে দেওয়া হয়।
কাঁওয়ার যাত্রা নিয়ে বিতর্ক থামছেই না। যাত্রাপথে খাবার ব্যবসায়ীদের নাম দোকানের সামনে টাঙিয়ে রাখার নির্দেশ নিয়ে এখনও বিতর্ক থামছে না। এবার মসজিদ ও মাজারের সামনে সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরাখণ্ডে হরিদ্বারের জ্বালাপুর শহরে। শুক্রবার সকালে ওই কাপড় লাগানো হয়েছিল বলেই জানা যায়।
দুটি মসজিদ ও একটি মাজারের সামনে কেন এমনভাবে কাপড় দিয়ে ঢাকা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সমাজের বিভিন্ন মহল। সমালোচনা শুরু হয় নেট দুনিয়ায়। তীব্র নিন্দার মুখে পড়ে শুক্রবার সন্ধ্যাতেই সেই কাপড় সরিয়ে নেওয়া হয়। মসজিদের মৌলনা এবং মাজারে কর্মরত এক ব্যক্তি বলেন, প্রশাসনের তরফ থেকে এমন নোটিশ দেওয়া হয়েছিল কিনা আমাদের জানা নেই। তবে এই প্রথম দেখলাম কাঁওয়ার যাত্রার সময় মসজিদ ও মাজারের সামনে সাদা কাপড় দিয়ে ঢাকা হচ্ছে।
কাঁওয়ার যাত্রার দায়িত্বে থাকা স্পেশাল পুলিশ অফিসার দানিশ আলি জানান, "রেলওয়ে পুলিশের তরফ থেকে কাপড় সরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই জন্যই আমরা কাপড় সরিয়ে নিয়েছি"।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে কংগ্রেস। কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী নাইম কুরেশি বলেন, এমন দৃশ্য প্রথম দেখছি। আমরা মুসলিমরা সর্বদা কাঁওয়ার যাত্রায় অংশ নেওয়া যাত্রীদের স্বাগত জানিয়ে এসেছি। এটাইতো হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির প্রতীক।
উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত জানান, "রাস্তায় মন্দির, মসজিদ, গির্জা একসাথে দেখতে পাওয়া তো ভারতের ঐতিহ্য। আর কাঁওয়ার যাত্রাপথের যাত্রীরা কি এতোটাই সংকীর্ণ মনের যে অন্য ধর্মের ধর্মীয় স্থানের ছায়া তাঁরা এড়িয়ে যাবেন?"
উত্তরাখণ্ড প্রদেশ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি সূর্যকান্ত ধাসমানা গোটা ঘটনায় বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি জানান, বদ্রিনাথ, চিত্রকূট, প্রয়াগরাজ এবং মঙ্গলৌরে নির্বাচনী বিপর্যয়ের পরেও বিজেপির শিক্ষা হয়নি। বিজেপি বিভেদমূলক এবং বৈষম্যমূলক রাজনীতি করছে। যা মানুষ প্রত্যাখ্যান করছেন। কিন্তু তারপরেও বিজেপি একই কাজ করে যাচ্ছে।
যদিও উত্তরাখণ্ডের পর্যটনমন্ত্রী সাতপাল মহারাজ সাংবাদিকদের বলেন, "এই ধরনের যেকোনও কাজ শুধুমাত্র ঝামেলা প্রতিরোধ করার জন্য করা হয়। বিশাল বড় কিছু নয়"।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন