কেন্দ্রের ওপর চাপ বাড়াল নাগাল্যান্ড সরকার। আফস্পা প্রত্যাহারের দাবিতে নাগাল্যান্ড বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হল। সপ্তাহ দুয়েক আগে নাগাল্যান্ডের মন জেলায় সেনাবাহিনীর গুলিতে নিরীহ গ্রামবাসীদের নিহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় হয়ে যায় রাজ্য তথা গোটা দেশ। গত ৪ ডিসেম্বরের ঘটনা। তারপর এই ইস্যুতে অনেকটাই জল গড়িয়ে গিয়েছে। নাগাল্যান্ড সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার যে ঘটনার রিপোর্ট নিয়ে দ্বৈরথ তৈরি হয়েছে। নাগাল্যান্ড পুলিশের রিপোর্ট সম্পূর্ণ আলাদা বলে প্রকাশ এসেছে।
প্রসঙ্গত, ওইদিন জঙ্গি সন্দেহে একটি গাড়িতে গুলি চালায় কমান্ডোরা। সেনাবাহিনীর বক্তব্য ছিল, শ্রমিক বোঝাই ওই গাড়িটিকে দাঁড় করাতে বলা হয়। কিন্তু চালক গাড়ি দাঁড় না করে পালিয়ে যেতে চান। তাই গুলি চালানো হয়েছে। কিন্তু ঘটনাক্রমে দেখা যায়, গুলি লেগেছে সামনে থেকে। যদি ধাওয়া করে গুলি চালানো হত, সেক্ষেত্রে পিছন দিক থেকে গুলি লাগত। কিন্তু তা না হওয়ায় প্রশ্ন চিহ্ন উঠেছে।
‘ইন্টেলিজেন্স ফেলিওর’ অর্থাৎ গোয়েন্দা তথ্যে ভুল ও পরিস্থিতির বিচারের গলদের জন্য প্রাণ হারাতে হয় ১৩ জন সাধারণ মানুষকে। পালটা উন্মত্ত জনতার হাতে প্রাণ হারান এক জওয়ান। তারপর থেকেই আফস্পা আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে পাহাড়ি রাজ্যটিতে। কনিয়াক গোষ্ঠী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, সেনাবাহিনীর কোনও পদক্ষেপ কোনও ভাবে বরদাস্ত করা হবে না।
এদিকে, সোমবার সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে বিতর্কিত আইনটি প্রত্যাহারের দাবিতে প্রস্তাব পেশ করা হয় বিধানসভায়। মুখ্যমন্ত্রী নেইফু রিও-র সেই প্রস্তাব বিনা বাধায় ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, নাগাল্যান্ডে মুখ্যমন্ত্রী নেইফু রিও’র এনডিপিপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার চালাচ্ছে বিজেপি। পাশাপাশি নাগাল্যান্ডের নিউল্যান্ড মহকুমাকে জেলার তকমা দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আফস্পা আইন প্রত্যাহারের দাবি বহুদিনের। সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তার নামে সেনাবাহিনীর নির্যাতন নিয়ে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে। প্রসঙ্গত, নয়ের দশক থেকে অসম, নাগাল্যান্ড-সহ উত্তরপূর্ব ভারতের প্রায় সবকটি রাজ্যকে ‘উপদ্রুত এলাকা’ হিসাবে চিহ্নিত আফস্পা প্রয়োগ করেছে কেন্দ্র। মণিপুরের চিত্রটাও একইরকম।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন