দেশের শাসককে গরিব শ্রেণির জন্য ভাবতে হবে। গুরুত্ব দিতে হবে তাদের চাহিদার ওপর। কিন্তু বাস্তবে তা দেখা যায় না। শাসক ব্যস্ত ধনীদের কথা শুনতে। লোকসভা নির্বাচনের আগে এক সাক্ষাৎকারে এমনই মন্তব্য করেছেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন।
আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচন শুরু। তার আগে এক সর্বভারতীয় এক সংবাদসংস্থায় সাক্ষাৎকার দেন অমর্ত্য সেন। সেখানেই ভারতের বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শাসক বা সরকারের ঠিক কেমন চরিত্র হওয়া উচিত তা সংক্ষেপে ব্যাখ্যা দেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, 'ভারতের শাসক শ্রেণীগুলি সবসময় ধনীদের নিয়েই ব্যস্ত। গরীব শ্রেণির জন্য ভাবে না। অবহেলা করা হয় গরিবদের। তাঁরা ন্যূনতম চিকিৎসাটুকু থেকেও বঞ্চিত হন, যা তাঁদের মৌলিক অধিকার'।
অমর্ত্য সেন আরও বলেন, শাসকের দরকার পিছিয়ে থাকা শ্রেণিকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে আসা যায়, তাদের কীভাবে উন্নতি করা যায় সেইসব পরিকল্পনা গ্রহণ করা। ভারতে এই মহূর্তে সবথেকে বেশি দরকার কর্মসংস্থান। পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকেও উন্নতি করতে হবে। দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করতে এই বিষয়গুলির ওপর সরকারকে জোর দিতেই হবে।
অমর্ত্য সেনের কথায় উঠে এসেছে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রসঙ্গও। যা লোকসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীদের কাছে অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে। অর্থনীতিবিদ বলেন, "শাসক চাইলে বিভিন্ন নিয়ম মেনে সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে। হয়তো একটি ধর্মকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে। কিন্তু তাতে সমাজের লাভ হবে না। ভারত আসলে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, যার ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান আছে। কিন্তু তাকে শুধুমাত্র হিন্দু সত্তা দেওয়া হলে, এতে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ ভিত্তি এবং বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক প্রকৃতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।"
ভারতের বিরোধীদের নিয়েও মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ইন্ডিয়া মঞ্চের দলগুলির মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। এর জেরে আমজনতার মধ্যে তারা সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেনি। এর উপর জেডি (ইউ) এবং আরএলডি-র গুরুত্বপূর্ণ দল শাসক শিবিরে যোগ দিয়েছে। সমস্ত বিরোধী দল একত্রিত থাকলে অনেক শক্তি পাওয়া যেত।
কংগ্রেস প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, কংগ্রেসের অনেক সাংগঠনিক সমস্যা রয়েছে যার আশু প্রতিকার প্রয়োজন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন