উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন সাংসদ তথা ‘গ্যাংস্টার’ আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আশরাফের হত্যাকাণ্ডের মামলার আবেদন গ্রহণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার শুনানি হবে আগামী সোমবার অর্থাৎ ২৪ এপ্রিল।
পিটিশনে বলা হয়েছে, ‘উত্তরপ্রদেশের বিশেষ পুলিশ মহানির্দেশক (আইন শৃঙ্খলা)-র বিবৃতি অনুসারে, ২০১৭ সালের পর মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যানাথের আমলে ১৮৩ জনকে এমকাউন্টার করা হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত করা দরকার। এজন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক। এ ছাড়া, পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন কীভাবে আতিক এবং আশরফের মৃত্যু হল, সে বিষয়েও তদন্ত করা হোক।’
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের উল্লেখ করে পিটিশনে বলা হয়েছে, ‘পুলিশের এই ধরনের পদক্ষেপ গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের পরিপন্থী। একটি গণতান্ত্রিক সমাজে পুলিশকে চূড়ান্ত বিচার বা শাস্তি প্রাদানের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে না। শাস্তির বিষয়টি শুধুমাত্র বিচারবিভাগের অধীনেই থাকা উচিত।’
গত শনিবার রাতে (১৫ এপ্রিল), প্রয়াগরাজের হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য আতিক এবং তাঁর ভাই আশরাফকে নিয়ে গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। তাঁদের হাতে হাতকড়া পড়ানো ছিল। হাসপাতালে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই ভাই। পুলিশের ঘেরাটোপে থেকে সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। এসময়, সাংবাদিক সেজে এবং ‘জয় শ্রী রাম’ শ্লোগান তুলে আতিক ও আশরফের মাথায় ২০ রাউন্ড করে তিন আততায়ী। প্রাণ হারান, দুই ভাই।
পুলিশ সূত্রে খবর, আততায়ীরা হলেন- লাভলেশ তিওয়ারি, সানি সিং এবং অরুণ মৌর্য। তবে, তাঁদের কোনও পরিচয় সামনে আনেনি যোগী প্রশাসন।
এদিকে, এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় সারা দেশ। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এত পুলিশি নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও কীভাবে দুই ভাইকে কী ভাবে গুলি করে মারল আততায়ীরা। এর নেপথ্যে বড় কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও জোর জল্পনা চলছে।
এরই মাঝে জানা যাচ্ছে, ‘এনকাউন্টারে’ মারা যেতে পারেন, এ নিয়ে আদালতে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করে নিরাপত্তার আবেদন করেছিলেন আতিক।
মঙ্গলবার, নিহত আতিকের আইনজীবী বিজয় মিশ্র বলেন, ‘সুরক্ষার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন আতিক আহমেদ (৬০)। উমেশ পাল হত্যা মামলায় তাকে এবং তার পরিবারকে মিথ্যাভাবে জড়ানো হয়েছে এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাকে ভুয়ো এনকাউন্টারে হত্যা করতে পারে- আদালতের কাছে এই আশঙ্কা আগেই করেছিলেন তিনি।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন