কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় গত বছর বিতর্কিত মন্তব্য করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সেই বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, এক কিশোরীর সঙ্গে এক যুবকের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কে থাকাকালীন কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় অভিযুক্ত যুবককে দোষী সাব্যস্ত করেছিল নিম্ন আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় যুবক।
গত বছর ১৮ অক্টোবর শুনানিতে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস এবং বিচারপতি পার্থসারথি সেনের বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় খারিজ করে অভিযুক্ত যুবককে বেকসুর খালাস করে দেয়। পাশাপাশি, বিচারপতির বেঞ্চ বেশ কয়েকটি পর্যবেক্ষণ রাখে।
হাইকোর্ট জানায়, কিশোরীদের যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। দু’মিনিটের তৃপ্তির জন্য সেই নিয়ন্ত্রণ হারানো উচিত নয়। অন্যদিকে, কিশোরদের কিশোরী, মহিলা, তাঁদের মর্যাদা এবং শারীরিক স্বাধীনতাকে সম্মান জানানো উচিত। পাশাপাশি, কিশোর-কিশোরীদের সম্মতিক্রমে সহবাসে পকসো (Protection of Children from Sexual Offences Act) ধারা প্রয়োগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল আদালত। প্রাপ্তবয়স হওয়ার আগে সহবাস করলে যে ধরনের আইনি জটিলতা তৈরি হয়, তা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেওয়ার কথাও বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। কিশোরদেরও কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সময় হাইকোর্টের 'যৌন উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ' পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
এরপর সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের কোর্টের বিচারপতি অভয় ওকা এবং বিচারপতি উজ্জল ভুঁইয়ার বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। আদালতের পক্ষ থেকে কী ভাবে রায় লিখতে হবে, তার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, কিশোর-কিশোরী সম্পর্কিত মামলায় বিশেষ সংবেদনশীল এবং সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া দোষীর কী শাস্তি হবে তা ঠিক করতে বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি গঠন করা হবে। সেই কমিটি যা সুপারিশ করবে তার ভিত্তিতে শাস্তি হবে দোষীর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন