অচ্ছে দিন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল মোদি সরকার। প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রে শূন্যপদ পূরণ করার আশ্বাসও ছিল। ভালো দিন আসার আশা সাধারণ মানুষ করছেন কিনা বিতর্কের বিষয়। কিন্তু বেকারত্ব নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য খুব ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিল না। কেন্দ্রীয় সরকারেরই শূন্যপদের সংখা বেড়ে ৮.৭ লক্ষেরও বেশি। এর মধ্যে রেলেই শূন্যপদ ৩ লক্ষের বেশি। শূন্যপদ বাড়ছে, কিন্তু প্রতিবছর রেল-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের নানা দফতরে নিয়োগ কমছে। শুক্রবার কেন্দ্রের কর্মীকৃত্যক দফতরের মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং এমনটাই জানান।
এদিকে দীর্ঘ দিন ধরে কেন্দ্রের প্রতি দফতরে অনুমোদিত পদ শূন্য থাকায় অনেক জায়গাতেই নামমাত্র মজুরিতে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে। ফলে সরকারি চাকরিতে চলছে দেদার চুক্তি শ্রমিক। প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্ষমতায় এসে প্রতিবছর ২কোটি চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। শূন্যপদের সংখ্যা বলছে, নতুন চাকরি বা কর্মসংস্থান দুরের কথা, তাতে সরকারি নিয়োগ কমছে দ্রুত হারে।
এদিন কেন্দ্রে সরকারি চাকরি নিয়ে মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং জানাচ্ছেন, ২০২০-র ৩মার্চ পর্যন্ত কেন্দ্রে বিভিন্ন দফতরে মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৪০ লক্ষ ৪ হাজার ৯৪১। বর্তমানে তাতে কর্মী সংখ্যা ৩১ লক্ষ ৩২ হাজার ৬৯৮ জন। শূন্যপদ ৮ লক্ষ ৭২ হাজার ২৪৩। রেলে মোট অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১৫ লক্ষ ৭ হাজার ৬০৪। কর্মীর সংখ্যা ১২ লক্ষ ৭০ হাজার ৩৯৯। শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় ৩লক্ষ। অন্যদিকে ২৫৬টি চালু কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় কর্মী সংখ্যা ৯.২০ লক্ষ। কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা শূন্যপদের সংখ্যা জানতে চাওয়া হলেও তার জবাব দেওয়া হয়নি। নিয়োগ সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাতেও শূন্যপদের সংখ্যা ৬০ হাজারের বেশি। এদিকে দু চারটি বাদ দিয়ে বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাই ঢালাও বিক্রির পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। ফলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় চলছে অবসর প্রকল্পের নামে দেদার কর্মী সঙ্কোচন।
এদিকে শূন্যপদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে কেন্দ্রের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের হার দ্রুত কমছে। মন্ত্রী সরকারি চাকরির নিয়োগ নিয়ে জানাচ্ছেন, কেন্দ্রে চারটি সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ হয়ে থাকে। তা হল ইউপিএসসি, এসএসসি এবং আরআরবি (রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ড)। ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮, ২০১৮-১৯, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ সাল নিয়ে পাঁচ বছরে তিন সংস্থায় নিয়োগের সংখ্যা জানানো হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, পাঁচ বছরে সব থেকে বেশি নিয়োগ কমেছে আরআরবিতে বা রেলে। শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, দেখা গিয়েছে দীর্ঘদিন নিয়োগ কম করে বা বন্ধ রেখে এক সময়ে সেসব শূন্যপদ তুলে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে কেন্দ্রীয় সরকারি চাকরিতে নিয়োগ কমায় সবথেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তফশিলি জাতি আদিবাসী ও অন্যান্য অনগ্রসর সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের জন্য সংরক্ষিত পদে দীর্ঘদিন কোনও নিয়োগ না হওয়ায় সেসব পদ শূন্য পড়ে রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন