জব কার্ড বাতিলের নিরিখে তৃণমূল শাসিত পশ্চিমবঙ্গকে পিছনে ফেলে দিয়েছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ। বাংলার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ১০০ দিনের কাজের জব কার্ড বাতিল হয়েছে উত্তরপ্রদেশে। অথচ সে রাজ্যের কেন্দ্রীয় বরাদ্দ অর্থ বন্ধ করা হয়নি। কিন্তু বাতিল করে দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের টাকা।
সোমবার এমনই চাঞ্চল্যকর পরিসংখ্যান পেশ করে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার তথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে তুলোধোনা করল তৃণমূল। ঘাসফুল শিবিরের দাবি, উত্তরপ্রদেশ বিজেপিশাসিত বলেই সে রাজ্যের যোগী সরকারের কোনও দোষ দেখতে পাচ্ছে না কেন্দ্র।
১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনায় কেন্দ্রের তরফে প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত শ্রমিকদের নিয়ে সেই বরাদ্দ অর্থ আদায়ে দিল্লিতে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। সোমবার গান্ধী জয়ন্তীর সকালে দিল্লির রাজঘাটে ধর্না কর্মসূচীর মাধ্যমে দুদিন ব্যাপী আন্দোলন শুরু করে ঘাসফুল শিবির।
সোমবার সন্ধ্যায় টুইটারে (বর্তমানে X) উত্তরপ্রদেশে ১০০ দিনের জব কার্ড বাতিলের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তৃণমূল জানিয়েছে, “২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে উত্তরপ্রদেশে MGNREGA জব কার্ড বাতিল হয়েছে ৪৪ লক্ষ ৭৫ হাজার ৬৩৪টি। এই সংখ্যাটা পশ্চিমবঙ্গে বাতিল হওয়া জব কার্ডের সংখ্যার প্রায় দ্বিগুণ।” তাও বিজেপিশাসিত উত্তরপ্রদেশের বরাদ্দ অর্থ বন্ধ করা হয়নি, কিন্তু বাংলার জন্য কেন্দ্রীয় বরাদ্দ অর্থ ২০২১ সাল থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তৃণমূল শিবির।
ওই পোস্টে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করে আরও জানানো হয়েছে, “প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, নিজেদের মধ্যে কেউ দোষ করলে সেটা ধরা হয় না, তাই না?” তৃণমূলের দাবি, দীর্ঘ বহুদিন ধরেই ১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনায় বাংলার জন্য বরাদ্দ টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সোমবার কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ‘বঞ্চিত’ শ্রমিকদের নিয়ে সেই প্রাপ্য টাকা আদায়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দিল্লি পৌঁছেছে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের একটা বড় অংশ।
সোমবার রাজঘাটে ধর্না কর্মসূচী নিয়েছিল তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারা। কিন্তু সেই ধর্না চলাকালীনই দিল্লি পুলিশের বিশাল বাহিনী ও র্যাফ এসে রাজঘাট থেকে তাঁদের চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। কর্মসূচীর শেষে ওই স্থানেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন পুলিশ হুইসেল বাজিয়ে দ্রুত রাজঘাট ফাঁকা করে দিতে বলে। তখনই দিল্লি পুলিশের সঙ্গে চরম সংঘাত বাঁধে অভিষেক-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্বের।
পরে নিজের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে অভিষেক লেখেন, “বাংলার MGNREGA ও আবাস যোজনার প্রাপ্য অর্থের জন্য দাবি করা নিয়ে আমাদের ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’কে নির্মমভাবে দমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার যে ভয়ে কাঁপছে, এতে কোনও সন্দেহ নেই।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন