কলকাতার পাশাপাশি রাজধানী দিল্লিতেও আড়াআড়ি বিভাজিত তৃণমূল। আইপ্যাক নিয়েই এই দ্বিধাবিভক্তি। এই পরিস্থিতি নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। শনিবার বিকেলে কালীঘাটে জরুরি বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছিলেন অভিষেক সহ আরও অনেক শীর্ষ নেতৃত্ব। বৈঠকে সভানেত্রী ছাড়া আপাতত শীর্ষস্তরের সব পদ বাতিল করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক নিয়ে সাংসদ সৌগত রায় সম্প্রতি একটি মন্তব্য করেন। তার তীব্র বিরোধিতা করেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। লোকসভার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সৌগতকে সভানেত্রীর নির্দেশ জানিয়ে ভবিষ্যতেও মুখ না খোলার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, সৌগত রায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এতদিন পর্যন্ত অভিষেকের সমস্ত সুরে সুর মিলিয়েছেন তিনি। এমনকি ৬০ বছর বয়সে নেতাদের অবসরের বিষয়েও অভিষেকের মন্তব্যকে সমর্থন করেছেন তিনি।
দলের প্রবীণ নেতা সৌগতবাবুর বিরুদ্ধে দল যে রুষ্ট, তা স্পষ্ট দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়। তিনি বলেন, ‘সৌগতবাবুর ৭৫ বছর বয়সে এসে এধরনের বোধোদয় কেন? উনি ঠিক কী চাইছেন তা আগে স্পষ্ট করুন।’
অন্যদিকে এই ইস্যুতে কংগ্রেসের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলে নবীন এবং প্রবীণের সংমিশ্রন চান। তিনি মাঝখানে জেলাসফর, প্রশাসনিক বৈঠক, নবান্নের কাজ এবং রুটিনমাফিক দলীয় কর্মসূচিতে ব্যস্ত ছিলেন। কিন্তু সঠিক সময়ে ফের দলের হাল ধরেছেন তিনি। এতে তৃণমূল ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে। ১৯৯৮ সালে তাঁর তৈরি দলের ধারেকাছে দেশের কোনও আঞ্চলিক দল নেই। ৩৪ বছরের বাম সরকারকে হটানো ব্রিটিশদের দেশ থেকে তাড়ানোর মতোই বিষয়। মমতা সেটা করে দেখিয়েছেন।’
এই আইপ্যাক এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুতে আড়াআড়ি বিভাজিত হয়েছে তৃণমূল। একদল এঁদের পক্ষে এবং বাকিরা বিপক্ষে।
অন্যদিকে গতকাল আইপ্যাকের ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে আই-প্যাক যেদিন থেকে কাজ শুরু করে, তখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় মেরুকরণ, অশান্তি, হিংসার ঘটনা ঘটছিল। দুই বছর ধরে আইপ্যাকের কাজের ফলেই রাজ্যে পরিস্থিতি বদলায়। গত বিধানসভা ভোটে মমতার দলের বড় জয়ে নিজেদের কৃতিত্ব দাবি করেছে তারা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন