ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি-মার্কসবাদী (সিপিআই-এম) রবিবার অভিযোগ করেছে, ২ মার্চ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ৬৬৮টি হিংসার ঘটনা ঘটেছে। ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি। এই নির্বাচনে কোনওমতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বিজেপি। এরপর থেকেই রাজ্যজুড়ে বাম সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ওপর আক্রমণের অভিযোগ উঠেছে।
৬০ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৩২ টিতে জয়লাভ করে ত্রিপুরায় দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেছে বিজেপি। সিপিআই-এর অভিযোগ, রাজ্যে ফলাফল ঘোষণার পর হিংসার ঘটনায় কমপক্ষে ৩ জন নিহত হয়েছে এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। হিংসার ঘটনায় বহু সম্পত্তি লুট হয়েছে এবং একাধিক বাড়ি ধ্বংস/ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিপিআই-এম ত্রিপুরার রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী, প্রাক্তন মন্ত্রী তপন চক্রবর্তী এবং বামফ্রন্টের আহ্বায়ক নারায়ণ কর রবিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব জে কে সিনহার সাথে দেখা করেন এবং ত্রিপুরায় বর্তমান "হিংসাত্মক পরিস্থিতি" সম্পর্কে তাঁকে জানান।
সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, "২ মার্চ থেকে ধারাবাহিক আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে, মহিলা ও শিশু সহ হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। তারা জঙ্গলে এবং রাজ্যের বাইরে আশ্রয় নিয়েছে।" তিনি বলেন, "বিজেপির গুন্ডা এবং দলের কর্মীরা মানুষের উপর হামলা করেছে, তাদের বাড়িঘর এবং সম্পত্তি পুড়িয়ে দিয়েছে"।
বাম নেতা আরও জানিয়েছেন, "পুলিশ নীরব দর্শক থেকেছে এবং এফআইআর নথিভুক্ত করতে অস্বীকার করেছে। মুখ্যসচিব, পুলিশের মহাপরিচালককে উদ্ধৃত করে বলেছেন যে হিংসাত্মক ঘটনার সাথে জড়িত ২৩৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসলে এই ২৩৮ জনকে কিছুক্ষণের জন্য আটক করা হয় এবং কিছুক্ষণ পরেই ছেড়ে দেওয়া হয়।”
তিনি আরও বলেন, ১৬ ফেব্রুয়ারি বিধানসভা নির্বাচনে, রাজ্যের ৬১ শতাংশেরও বেশি মানুষ বিজেপির পক্ষে তাদের ভোট দেয়নি এবং ২০১৮ সালের তুলনায় বিজেপি জোটের ১১ শতাংশ ভোট কমেছে।
জিতেন্দ্র চৌধুরী জানান, গত ৪ দিনে বিরোধী দলের সমর্থকদের বিপুল সংখ্যক গাড়ি, দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, রাবার বাগান, মাছের পুকুর এবং অন্যান্য সম্পত্তি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বা ধ্বংস করা হয়েছে।
অন্যদিকে, রাজ্যের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা পুলিশ প্রধান অমিতাভ রঞ্জনের সাথে সিপাহিজলা ও খোয়াই জেলা পরিদর্শন করেছেন। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন