রাজ্যের একাধিক থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পরেও নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেন সিপিআই(এম) ত্রিপুরার তিন শীর্ষ নেতা বিজন ধর, ভানুলাল সাহা এবং জিতেন্দ্র চৌধুরী। এঁদের মধ্যে ত্রিপুরা রাজ্য বামফ্রন্টের আহ্বায়ক বিজন ধর, ভানুলাল সাহা বর্তমান বিধায়ক এবং জিতেন্দ্র চৌধুরী প্রাক্তন সাংসদ। এঁদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সরকার।
এই প্রসঙ্গে মাণিক সরকার জানিয়েছেন – প্রত্যেকের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। আমাদের নেতৃত্বের বক্তব্যে কোনো ভুল নেই। গতকাল পূর্ব আগরতলা থানায় হাজিরা দিয়ে বেরিয়ে সিপিআই(এম) বিধায়ক ভানুলাল সাহা জানান - 'দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার বার্তা দিতেই ঝোলা থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়লো' গতকালই আমতলী থানায় গিয়ে হাজিরা দেন রাজ্যের প্রাক্তন সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান – বিজেপি নেতা ও মন্ত্রী রতন লাল নাথের নির্দেশে এই এফ আই আর করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন – রাজ্যে কোনো আইন শৃঙ্খলা নেই। রাজ্যের কোনো মানুষের নিরাপত্তা নেই। সর্বস্তরের মানুষের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে। তাই আমরা এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিয়েছি। এর মধ্যে কোনো অন্যায় নেই।
এদিনই ত্রিপুরা সিপিআই(এম)-এর ত্রিপুরা সোশ্যাল মিডিয়া পেজ থেকে দুই বিজেপি নেতার প্ররোচনামূলক বক্তব্য তুলে ধরে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজ্য প্রশাসন?
ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্তে বিজেপির বিরুদ্ধে লাগামছাড়া সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্য সিপিআই(এম)-এর এই তিন নেতা প্রতিরোধের বার্তা দিয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্যের সারমর্ম ছিলো - আত্মরক্ষার জন্য প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। দলীয় কর্মী সমর্থকদের কাছে তাঁদের এই বার্তা দেবার পরেই রাজ্যের বিভিন্ন থানায় বিজেপির পক্ষ থেকে এঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা শুরু হয়।
বিজেপির অভিযোগ, সিপিআই(এম) হিংসায় উসকানি দিচ্ছে। এর জেরে গত দু’দিনে বিভিন্ন থানায় তিন সিপিআই(এম) নেতা হাজিরা দেন। যদিও থানায় হাজিরা দিলেও নিজেদের বক্তব্য থেকে একচুলও সরেননি এই তিন নেতা। বিজন ধর স্পষ্টই জানিয়েছেন – আত্মরক্ষার প্রয়োজনে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেবার মধ্যে কোনো ভুল নেই।
উল্লেখ্য, রবিবারও রাজ্যের কমলপুরে সিপিআই(এম) লোকাল কমিটির অফিস এবং কয়েকজন নেতৃত্বের বাড়িতে হামলা হয়। সিপিআই(এম)-এর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী মনোজ দেবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ওই বিবৃতি অনুসারে – এই হামলা ও ভাঙচুরে নেতৃত্বদানকারী মন্ত্রী মনোজ দেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে সিপিআই(এম)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন