ত্রিপুরায় বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও সেখানে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব কিছু কম নয়। এটা যেমন সেরাজ্যের নেতৃত্ব জানে, তেমনই সম্পূর্ণ অবগত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। বিজেপি বিধায়ক হয়েও সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের ঘোরতর বিরোধী সুদীপ রায় বর্মন। দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে কদিন আগে তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, আগামী ২০২৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি আর বিজেপির টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার একটা জল্পনা তৈরি হয়েছিল তাঁকে ঘিরে।
এবার তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানালেন। স্পষ্ট ভাষায় বলে দিলেন, মুখ্যমন্ত্রী আবোল তাবোল বলার মাস্টার! শুধু তাই নয়, আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সুদীপ রায় বর্মন। ত্রিপুরায় একনায়কতন্ত্র চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'রাজ্যে রীতিমতো এক ব্যক্তির শাসন চলছে। নেতা-মন্ত্রী কারও কোনও ক্ষমতাই নেই। আইনশৃঙ্খলা লাটে উঠেছে। পুলিশ কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথের ভূমিকায় আছে!' তিনি স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন, সবকিছু হয় মুখ্যমন্ত্রীর অঙ্গুলিহেলনে। বাকিদের কোনও ক্ষমতা নেই।
ক’ দিন আগেই ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব রাজ্যে বিপুল কর্মসংস্থানের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এই বিষয়ে সুদীপ রায় বর্মনের কটাক্ষ, 'মুখ্যমন্ত্রী আবোল তাবোল বলার মাস্টার। ওর কথা সিরিয়াসলি নেওয়ার কিছু নেই। প্রতিদিন কথা পালটে ফেলেন।' বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়কের তোপ, 'কাজ কিছু হয়নি। খালি শিলান্যাস করছেন। ফলক লাগাচ্ছেন। মানুষ ক্ষুব্ধ। এই মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কে আমি না, মানুষই বলছেন।'
আগামী নির্বাচনে বিজেপির হয়ে আর লড়াই না করার বিষয়ে বলেন, 'আগামী নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রতীকে লড়ব না আমি। আমি এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছি। সবার সঙ্গে কথা বলছি। ঠিক সময় মতো সিদ্ধান্ত নেব।'
এদিকে সুদীপ রায় বর্মন বিজেপির টিকিট আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না ঘোষণা করার পর থেকেই ত্রিপুরায় জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অনেকে মনে করছেন, সুদীপ তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আর একটি সূত্র মনে করছে, কংগ্রেসের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন সুদীপ।
প্রসঙ্গত, ত্রিপুরার বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সঙ্গে সুদীপ রায় বর্মনের দূরত্বের কথা সবাই জানেন। গত লোকসভা ভোটের পর তাঁর মন্ত্রিত্ব কেড়ে নেওয়া হয়। গেরুয়া শিবিরে কার্যত একঘরে সুদীপবাবু। তাঁর অনুগামীরা একটি রক্তদান শিবির আয়োজন করেছিলেন কয়েকদিন আগে। সেই শিবির ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপির আর একটি অংশের বিরুদ্ধে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন