তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের নিজেদের প্রমাণ দিতে হবে। তার জন্য পোশাক খুলে প্রমাণ দিতে হবে। এভাবেই তাঁদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অমানবিক এমনই ঘটনা ঘটেছে ত্রিপুরার আগরতলায়।
অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। তারা কাউকেই হেনস্থা করেনি। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ বলে দাবি। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সিপিআইএমের পলিটব্যুরো সদস্য রাজ্যের বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবকে তিনি এই মর্মে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জোরাল ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এলজিবিটি-সহ ত্রিপুরার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দাবি উঠেছে। পশ্চিম ত্রিপুরা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চাইলেও তা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
জানা গিয়েছে, গত রবিবার মেলার মাঠ এলাকায় এক অনুষ্ঠান সেরে ফিরছিলেন ওই চার ব্যক্তি। অভিযোগ, রাতে টহলরত পুলিশকর্মীরা তাঁদের ঘিরে নানা প্রশ্ন করেন। পরে তাঁদের পশ্চিম ত্রিপুরা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। শুরু হয় হেনস্তা। পরনে মহিলাদের পোশাক থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তারপর তাঁদের পোশাক খোলার কথা বলা হয়। কিন্তু খুলতে অস্বীকার করায় পুলিশকর্মীরা তাঁদের জামা ছিঁড়ে দেয়। পরদিন থানা থেকে তাঁরা মুক্তি পান বটে।
শুধু তাই নয়, তাঁদের দিয়ে মুচলেকা লিখিয়ে নেওয়া হয়। লেখানো হয়, তাঁরা সকলে পুরুষ এবং আর কখনও মহিলাদের পোশাক পরবেন না। এরপরই তাঁদের একজন পশ্চিম ত্রিপুরা থানায় হেনস্তার অভিযোগ দায়ের করেন।
যদিও পুলিশের পাল্টা দাবি, ওই চার ব্যক্তি ওইদিন রাতে মেলার মাঠ সংলগ্ন এলাকায় তোলাবাজি করছিল। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে যথাযথ উত্তর না মেলায় তাঁদের আটক করা হয়। পরদিন সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁদের হেনস্থার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
পরদিন ওই চার তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের এক প্রতিনিধি পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার প্রায় ৭২ ঘণ্টা পর পুলিশ সাফাই দিল। ফলে প্রশ্ন উঠছে, অভিযোগ দায়েরের পর আত্মপক্ষ সমর্থনে এত কেন দেরি হল পুলিশের? উর্দিধারীদের এই দাদাগিরির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকেই।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন