ভোটের নামে চূড়ান্ত প্রহসন হয়েছে। তাই এই নিয়ে কোনো মতামত দেবার কিছু নেই। ত্রিপুরা ভারতের একটি অন্যতম অঙ্গরাজ্য কিনা তা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণ মানুষ এই প্রশ্ন করতে শুরু করেছেন। গত ৪০-৪২ মাস যাবত এখানে ফ্যাসিস্টসুলভ সন্ত্রাস চলছে। অবিরাম চলছে। এই সরকার আসার পর থেকে লোকসভা নির্বাচন সহ সমস্ত নির্বাচন চূড়ান্ত প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। যার সর্বশেষ নিদর্শন পুর নির্বাচন। মঙ্গলবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআই(এম) নেতা মাণিক সরকার।
এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন - ভোট লুঠ হচ্ছে। বাহুবলের মধ্য দিয়ে, নির্বাচন কমিশনকে অথর্ব বানিয়ে, পুলিশকে নিষ্ক্রিয় রেখে মানুষের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। আমাদের দেশের সংবিধানের অন্যতম মূল কথা সংসদীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। তাতে ভোট হবে। শাসক দল বিরোধী দল ঠিক হবে। বিরোধীদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভোটটাই তো ত্রিপুরায় হচ্ছে না। একদলীয় স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা জাঁকিয়ে বসবার যে প্রচেষ্টা তা ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে। তার সাম্প্রতিক প্রকৃষ্ট উদাহরণ ত্রিপুরার সাম্প্রতিক নির্বাচন।
তিনি ত্রিপুরার সদ্যসমাপ্ত পুর নির্বাচন প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া এটা হতে পারে ভাবের কোনো কারণ নেই। দেশের প্রধানমন্ত্রী এই ভোটের পর অভিনন্দন জানিয়েছেন। এর চাইতে লজ্জার কিছু হতে পারে না। মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট অগ্রাহ্য করে প্রধানমন্ত্রী দিল্লি থেকে ২২ মিনিট ৫০ মিনিট বক্তব্য রাখলেন ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যে সরকারের কর্মসূচী নিয়ে। কোথায় নির্বাচন কমিশন?
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রের ওপর যে আক্রমণ চলছে তা আসলে সংবিধানের বিরুদ্ধে আক্রমণ। এর থেকে ত্রিপুরাকে উদ্ধার করতে হবে। ত্রিপুরার মানুষ এর থেকে উদ্ধার হতে চাইছে। মানুষ এটা মেনে নেবে না। মানুষের বিক্ষোভ বাড়ছে। সারা ত্রিপুরার মানুষের মধ্যে এই সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছে। মানুষ লড়াই আরও তীব্র করবেন। এবারের নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এদিন মাণিক সরকার বলেন, আমরা বামপন্থীরা ভূমিকা নিচ্ছি বলেই বারবার আক্রান্ত হচ্ছি। ভোটারদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। বলা হয়েছে লাশ রাস্তায় পড়ে থাকবে। যে ফল দেখানো হচ্ছে এটা কিসের ফল? এটা কিসের শতকরা হিসেব? একটা বড়ো অংশকে আগেই আটকে দিলো। একটা বড়ো অংশ তো ভোটই দিতে পারেননি। বাম প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের অনেক জায়গাতে ঢুকতেই দেওয়া হয়নি। মানুষ এগুলো মেনে নেবেন না। মানুষই রুখে দাঁড়াবেন।
রাজ্যে কোন দল দ্বিতীয় এবং কোন দল তৃতীয় এই প্রশ্নের উত্তরে সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য জানান, ভোটটাই তো হয়নি। ছাপ্পা হয়েছে। যেখানে ভোটই হয়নি সেখানে কে দ্বিতীয় কে তৃতীয় তা নিয়ে আমরা মাথা ঘামাচ্ছি না। এখানে অর্ধেকের বেশিই তো জালিয়াতি হয়েছে। কাজেই এটা নিয়ে যাদের সময় আছে তারা মাথা ঘামাতে পারেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন