ত্রিপুরায় "সরকারের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে" গ্রেফতার হওয়া দুই মহিলা সাংবাদিককে জামিন দিল গোমতী জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত রবিবার সমৃদ্ধি কে সাকুনিয়া এবং স্বর্ণ ঝা নামের দিল্লির দুই সাংবাদিককে আসাম থেকে গ্রেফতার করে ত্রিপুরা পুলিশ।
গত সপ্তাহে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের র্যালি চলাকালীন মিছিলে থাকা উত্তেজিত কিছু ব্যক্তি একটি মসজিদ ভাঙচুর করেন। তা নিয়ে প্রতিবেদন করায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে "সাম্প্রদায়িক বিভেদ ছড়ানো এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের" অভিযোগে মামলা দায়ের করে ত্রিপুরা পুলিশ। এরপর রবিবার আসামের করিমগঞ্জ জেলা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার গোমতী জেলার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করে।
আদালতে সাংবাদিকদের হয়ে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী পীযূষ কান্তি বিশ্বাস। তিনি জানিয়েছেন, ৭৫ হাজার টাকার বন্ডের বিনিময়ে সাংবাদিকদের জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত। জামিন মঞ্জুরের সময় আদালত বলেছে, অভিযুক্তদের অপরাধ গুরুতর প্রকৃতির হলেও তাঁদের আটকে রাখা তাঁদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় চরম হস্তক্ষেপ।
জামিনের পরেও ত্রিপুরা সরকারের তরফ থেকেও দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের মুখপাত্র তথা তথ্য মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেছেন, "দুই মহিলা সাংবাদিক জনগণকে উস্কানি দিচ্ছিলেন, সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানি দিচ্ছিলেন, অন্য রাজনৈতিক দলের হয়ে মুসলিম সম্প্রদায়কে একত্রিত করার চেষ্টা করছিলেন। যদি তাঁরা কেবল গ্রাউন্ড রিপোর্ট করতে চাইতেন, প্রতিবেদন করতে চাইতেন, তাতে আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু কেন তাঁরা উস্কানিমূলক পোস্ট করেছিলেন? আমরা সবাই দেখেছি যে অমরাবতীতে কী ঘটেছে, কীভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে উস্কে দেওয়া হয়েছিল, কারা করেছেন এটা? এই ধরণের সাংবাদিকরাই এটা করেছিলেন।"
মহিলা সাংবাদিকদের দাবি, রবিবার সকালে তাঁদের হোটেলে গিয়ে হুমকি দিয়েছে পুলিশ। এরপর এয়ারপোর্ট যাওয়ার পথে জোর করে তাঁদের আটক করা হয় এবং নিকটবর্তী থানায় প্রায় চার ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় তাঁদের। আইনজীবীর সাথেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। এরপর ত্রিপুরা আনা হয় তাঁদের। এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার তরফ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন