ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর) নিয়োগে ঘুষকান্ডে উত্তাল ত্রিপুরার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। গত কয়েকদিন ধরে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেবার অভিযোগ ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় পথ অবরোধের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন জায়গায় চাকরি প্রার্থীদের ক্ষোভের মুখে আক্রান্ত হয়েছেন বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব। রাজ্যের অন্তত ১০টি জায়গায় ক্ষুব্ধ চাকরি প্রার্থীরা বিজেপি অফিস ভাঙচুর করেছে। আগুন ধরানো হয়েছে বেশ কয়েকটি বিজেপি অফিসে। অন্যদিকে চাকরিপ্রার্থীরা রাজ্যের সচিবালয় সংলগ্ন ভিআইপি রোড অবরোধ করলে তাঁদের বেধড়ক মারধোর করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, বিগত বাম সরকারের আমলে টি এস আরের দুটি ব্যাটেলিয়ন তৈরির অনুমোদন এসেছিলো। যদিও বাম সরকারের পতনের ফলে সেই নিয়োগ হয়নি। রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার সাড়ে তিন বছর পর ২২০০ শূন্যপদের মধ্যে ১৪৪৩ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপরেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেবার অভিযোগ ওঠে। বিজেপির এক মহিলা পৃষ্ঠাপ্রমুখ জানান মণ্ডল সভাপতিকে ছেলের চাকরির জন্য ৩ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। তারপরেও চাকরি হয়নি।
বিক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় যারা ডাক পাননি বা যারা শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি তাঁদের নাম তালিকায় আছে। অথচ উত্তীর্ণ যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নামই তালিকা থেকে বাদ গেছে।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগের তীর একাধিক বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। যাদের মধ্যে আছেন মণ্ডল নেতা, শক্তি কেন্দ্রের ইনচার্জ, মণ্ডল সভাপতি, মন্ত্রীসভার এক সদস্যর নাম শোনা যাচ্ছে।
রাজ্যে টিএসআর নিয়োগে দুর্নীতি প্রসঙ্গে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী জানিয়েছেন, “রাজ্যে চাকরি নিয়ে এমন কেলেঙ্কারি কখনও হয়নি। বিজেপি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। প্রায় চার বছরের মাথায় চাকরি দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। বিজেপির নেতারাই একে অপরের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ করছেন!”
প্রসঙ্গত, সোমবার ত্রিপুরা পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ১৪৪৩টি পদের জন্য নামের তালিকা প্রকাশ হয়। এরপরেই রাজ্যজুড়ে দুর্নীতি হয়েছে অভিযোগ তোলেন চাকরিপ্রার্থীরা। অমরপুরের মৈলাক, পূর্বরাঙামাটি, বামপুর, বিলোনিয়া, কমলা সাগর, পূর্ব চাম্পামুড়া সহ বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি অফিস ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ ওঠে বিজেপির রাজ্যস্তরের নেতৃত্বের বিরুদ্ধেও। এই ঘটনাকে ঘিরে বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলও এখন প্রকাশ্যে এসে পড়েছে। প্রকাশ্যেই এক গোষ্ঠীর নেতারা অন্য গোষ্ঠীকে অভিযুক্ত করছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন