ত্রিপুরায় চলছে পুরসভা নির্বাচন। পাঁচ ঘণ্টাতেই ভুরিভুরি অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। "যত দ্রুত সম্ভব" আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী সেখানে মোতায়েন করার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট, যা এককথায় নজিরবিহীন। ত্রিপুরার স্বরাষ্ট্র সচিব, রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং ত্রিপুরা পুলিশের ডিজিকে এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের বেঞ্চ এদিন এই নির্দেশ দেয়। এদিন শীর্ষ আদালতে সিপিআই(এম)-এর পক্ষে আইনজীবী পি ভি সুরেন্দ্রনাথ ত্রিপুরায় সন্ত্রাসের ছবি তুলে ধরেন।
পুরভোটের দিন ঘোষণার পর থেকেই সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ উঠছে ক্ষমতাসীন বিজেপির বিরুদ্ধে। ৩৪ শতাংশ আসনে প্রার্থীই দিতে পারেনি বিরোধীরা। একাধিক বিরোধী প্রার্থী এবং তাঁদের আত্মীয়দের ওপর হামলা হয়েছে, বাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যে দু'বার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য ত্রিপুরা সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু শীর্ষ আদালতের নির্দেশই সার। বিরোধীদের অভিযোগ, গতকাল রাত থেকেই পুর এলাকাগুলিতে মাস্ক ও হেলমেট পরা দুষ্কৃতীরা বাইক নিয়ে টহল দিচ্ছেন। ভোটারদের ভোট দিতে না যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন। বিরোধী সমর্থকদের পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে ভয় দেখানো হচ্ছে। অধিকাংশ বুথে তাদের পোলিং এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। এজেন্টদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। ব্যাপক রিগিং হচ্ছে। প্রতিবাদে বিলোনিয়ায় এসডিএম অফিস ঘেরাও করেন সিপিআইএম কর্মী-সমর্থকরা।
এই সমস্ত কিছু দেখে শীর্ষ আদালত বলে, "এমন পরিস্থিতিতে আমরা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে নির্দেশ দিচ্ছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আরও ২ কোম্পানি CAPF (Central Armed Police Force) ত্রিপুরাতে মোতায়েন করা হোক। ভোটগ্রহণ অনেকক্ষণ আগে শুরু হয়েছে। এই বিষয়টি বিবেচনা করে বাকি ভোট গ্রহণ যাতে শান্তিপূর্ণ হয় তাই দ্রুত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করুন ত্রিপুরাতে।"
আদালত আরও বলে, "অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে দেখতে হবে প্রতি বুথে যথেষ্ট পরিমাণে CAPF সশস্ত্র কর্মী রয়েছে কিনা।"
এর আগে সিনিয়র অ্যাডভোকেট জেনারেল গোপাল শঙ্করানারায়ণন সুপ্রিম কোর্টে বলেছিলেন, "ভোট শুরুর আড়াই ঘণ্টার মধ্যেই ত্রিপুরা থেকে একাধিক সন্ত্রাসের অভিযোগ এসেছে। বুথের ভেতরে বহিরাগতরা ঘোরাঘুরি করছে এরকম একাধিক ভিডিও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যা চলছে তা এককথায় সন্ত্রাস। অবিলম্বে ত্রিপুরাতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়া হোক।" ভিডিওগুলো খতিয়ে দেখে সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ দেয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন