সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ (UAPA) প্রয়োগ করল ত্রিপুরা সরকার। সম্প্রতি ত্রিপুরায় যেসব হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। পিপলস ইউনিয়ন অফ সিভিল লিবার্টিজের সদস্য মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী মুকেশ এবং ন্যাশনাল কনফেডারেশনের সদস্য আইনজীবী আনসার ইন্দোরিকে নোটিশ পাঠিয়েছে পশ্চিম আগরতলা থানা।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ও বিবৃতির জন্য তাদের বিরুদ্ধে ইউএপিএর ১৩ নম্বর অনুচ্ছেদে (বেআইনি কার্যকলাপ) তাঁঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার মানিক দাস বলেন, মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্টে কয়েকজন আইনজীবী এসে ঘটনার জন্য তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু পোস্ট দেন। সেগুলো দেখে তাঁঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়। তাঁঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে সেগুলি তাঁঁরা নিজেরাই করেছেন নাকি ভুয়ো!
'হিউম্যানিটি আন্ডার অ্যাটাক ইন ত্রিপুরা' শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই দুই আইনজীবী সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলন ফেসবুক লাইভ করেন। এই রিপোর্টে ত্রিপুরায় ১২টি মসজিদ, ৯টি দোকান ও তিনজন মুসলিম সম্প্রদায়ের বাসিন্দার বাড়িতে আক্রমণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনাবলী নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করারও দাবি জানিয়েছেন তাঁঁরা। একই সঙ্গে যাঁঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় অসত্য ও উসকানিমূলক বক্তব্য ব্যবহার করছেন, তাঁঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করারও দাবি জানিয়েছেন।
অন্যদিকে, পাল্টা তাঁঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি, বিভিন্ন গোষ্ঠীর জনগণের শান্তি ভঙ্গকারী পোস্ট প্রচার ও বিবৃতি দেওয়ার জন্য তাঁঁদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। কোনও তথ্য প্রমাণ ছাড়াই এসব পোস্ট মুছে দিয়ে ১০ নভেম্বর পুলিশের সামনে তাঁদের হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশ পেয়ে ক্ষুব্ধ আইনজীবীদের বক্তব্য, আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য জনগণের সামনে এনে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছি। রিপোর্টে কিছু কিছু জায়গায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে।
মুকেশ জানান, তদন্তকারী অফিসারের সামনে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। ইন্দোরি বলেন, এইসব করে রাজ্য্য সরকার নিজেদের দোষ ঢাকতে চাইছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে নয়াদিল্লিতে বিক্ষোভ দেখান বামপন্থী ছাত্র আইনজীবী ও শ্রমিক সংগঠনগুলি। জেএনইউ ছাত্র সংসদের সভাপতি ঐশী ঘোষ বলেন, ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করে মানুষের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে দিতে চাইছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন