যে বক্তৃতার কারণে জেএনইউ-র প্রাক্তন ছাত্র উমর খালিদকে UAPA মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তা কখনোই সন্ত্রাসী কর্যাকলাপের মধ্যে পড়ে না। এমনই পর্যবেক্ষণ করলো দিল্লি হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণে কেন্দ্র সরকার ও দিল্লি পুলিশ বড়সড় ধাক্কা খেলো বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হওয়া দিল্লি দাঙ্গার ঘটনায় ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে গ্রেফতার করা হয় উমর খালিদকে। এখনও জেলবন্দী রয়েছেন তিনি। গত ২৪ মার্চ একটি ট্রায়াল কোর্টে খালিদের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। আদালতের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন খালিদ। সোমবার সেই আবেদনের শুনানিতেই এমন পর্যবেক্ষণ করেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি সিদ্ধার্থ মৃদুল এবং বিচারপতি রজনিশ ভাটনগরের ডিভিশন বেঞ্চ এদিন বলে, "২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন উমর খালিদ, সেটি শুনতে খারাপ লাগলেও তা সন্ত্রাস মূলক কর্যাকলাপের মধ্যে পড়ে না। আমরা খুব ভালোভাবে এটি শুনেছি এবং বিশ্লেষণ করেছি। তবে বক্তৃতাটি কতটা আপত্তিকর ছিল তার উপর ভিত্তি করে যদি মামলাটি করা হয় তাকে, সেক্ষেত্রে মামলা লড়ার জন্য প্রসিকিউশনকে সুযোগ দেবো আমরা। বক্তৃতাটি আপত্তিকর, অরুচিকর এবং মানহানিকর হতে পারে, তবে এটি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সমতুল্য কখনোই নয়।"
আগামী ৪ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
২০২০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি অমরাবতীতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA)-এর বিরুদ্ধে হওয়া একটি প্রতিবাদ সভায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন উমর খালিদ। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই সভায় উস্কানিমূলক বক্তৃতা দিয়েছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, CAA বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে লাগাতার উস্কানিমূলক বক্তৃতা দিচ্ছিলেন খালিদ, যার পরিণতি দিল্লি দাঙ্গা, এমনটাই অভিযোগ দিল্লি পুলিশের। দিল্লি দাঙ্গার অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ওই বছর ১৪ সেপ্টেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। যদিও দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও উমর খালিদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন