টানা ৩১ ঘন্টা গোয়ালঘরে আটকে। ঋণ শোধ করতে না পারার কারণে টানা ৩১ ঘন্টা গোয়ালঘরে আটকে রাখা হল ৩৫ বছরের এক দলিত যুবককে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের বুন্দি জেলার অন্তর্গত তালেদা থানা এলাকায়।
ঠিক কী ঘটেছিল? ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ শঙ্কর লালের বক্তব্য, আক্রান্ত রাধেশ্যাম মেঘওয়াল অভিযোগ করেছেন যে ঋণের টাকা না দিতে পারায় খামার মালিক পরমজিৎ সিং এবং তার ছোট ভাইসহ আরও চারজন তাকে অপহরণ করে। এরপর সেই ব্যক্তির উপর ক্রমাগত নির্যাতন চালানো হয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছয়জনই পলাতক। তাদের সকলের বিরুদ্ধে থানায় এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে।
আক্রান্ত রাধেশ্যাম মেঘওয়াল জানান, "তিন বছর আগে পরমজিৎ সিং বার্ষিক ৭০ হাজার টাকার চুক্তিতে আমাকে কাজে নিয়োগ করেছিলেন। বোনের বিয়ের জন্য ৩০ হাজার টাকা আমি ধার নিয়েছিলাম। আমাকে ২০১৯ সালের মে মাস থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত চুক্তিভিত্তিক কাজে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাঁর খামারে একটানা ৬ মাস দৈনিক কাজ করার ফলে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম এবং চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরই পরমজিৎ সিং তার কাছে সুদ সমেত নগদ ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। তাঁর বক্তব্য, "কাজ ছেড়ে দেওয়ার পর ২০২০ সালে আমি ২৫ হাজার টাকা ফেরত দিতে পেরেছিলাম। কিন্তু মালিক সেই টাকার উপর ক্রমাগত সুদ চাপাতে থাকেন। এরপর ২০২১ সালে সিং এবং তার ছোট ভাই আমাকে জোর করে গ্রাম থেকে নিয়ে যায় এবং আমাকে টানা ১০ দিনের জন্য ফসল কাটার কাজ করতে দেয়।"
দলিত ব্যক্তির অভিযোগ, এই বছরের ২২ মে, সিং এবং তার ভাইসহ চারজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাকে সকাল ১১টার সময় একটি চায়ের দোকান থেকে অপহরণ করে।
এফ আই আর-এ রাধেশ্যাম জানান, " আমাকে সিং-এর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে হাত-পা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। মারধর করা হয়েছিল এবং টানা ৩১ ঘণ্টা একটি গোয়ালঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। আমাকে অপহরণ করা হয়েছে জেনে, আমার ছোট ভাই পরের দিন আসে এবং আমাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে, কিন্তু তারা ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দাবি করে। আমার ভাই এলাকার অন্য একজন জমিদারের কাছে গিয়েছিলেন, যিনি ৪৬ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে ভাইকে আশ্বাস দিয়েছিলেন যে আমি তার খামারে হালি হিসাবে কাজ করব। তারপর আমি বন্দীদশা থেকে মুক্ত হয়েছিলাম।"
২৪ মে দলিত ব্যক্তিটি অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। ডেপুটি এসপি শঙ্কর লাল বলেন, প্রাথমিকভাবে অভিযোগটি সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছে। IPC ধারা ৩৬৫, ৩৪২, ৩৪৩, ৩২৩ এবং SC/ST আইনের অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে এবং তাদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন