বিপুল পরিমাণ আয় সত্ত্বেও আয়কর আদায়ের প্রক্রিয়া কেন শুরু হয়নি, এই নিয়ে এবার অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা তেলেগু দেশম পার্টি (TDP)-এর প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডুর বিরুদ্ধে শো-কজ নোটিশ জারি করল আয়কর দফতর। ১১৮ কোটি টাকার ‘অপ্রকাশিত আয়’-এর কথা জানার পরেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে কর আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে না তা জানতে চেয়েই জারি করা হয়েছে ওই নোটিশ। বেশ কিছু ইনফ্রাস্ট্রাকচার কোম্পানির থেকে কিকব্যাক হিসেবে এই বিপুল টাকা পেয়েছে টিডিপি প্রধান বলে জানা গেছে।
নিউজ পোর্টাল দ্য ওয়ারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাঁর বিরুদ্ধে কর আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু হওয়া নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রাথমিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, বিচার বিভাগীয় মূল্যায়ন আধিকারিক নির্দিষ্ট অর্থবর্ষে তাঁর আয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুনর্মূল্যায়ন করার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে কর আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। নাইডুর এই অভিযোগের পরই শুক্রবার তাঁকে শো-কজ বিজ্ঞপ্তি ধরাল আয়কর দফতর।
নাইডুর অঘোষিত আয়ের বিষয়টি মনোজ বাসুদেব পারদাসানি নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে আয়কর দপ্তরের তল্লাশির পর প্রকাশ্যে এসেছে। এই মনোজ বাসুদেব পারদাসানি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে Shapoorji Pallonji & Co. Pvt Ltd (SPCL)-এর পক্ষ থেকে অন্ধ্র প্রদেশে টেন্ডারিং প্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছিলেন। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে তাঁর এবং তাঁর সহযোগীদের বাড়িতে হানা দেয় আয়কর দপ্তর। নায়ডুকে পাঠানো নোটিশে মনোজ বাসুদেব পারদাসানির নাম (এমভিপি হিসেবে লেখা আছে) উল্লেখ রয়েছে।
উল্লেখ্য, অন্ধ্রপ্রদেশের রাজনীতিতে টিডিপি এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এর মধ্যে সম্ভাব্য জোট নিয়ে জোরদার জল্পনা শুরু হয়েছে। জানা যাচ্ছে আগামী লোকসভা নির্বাচনে দুই দল একসাথে লড়বে। গত জুনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে নাইডুর বৈঠক সেই জল্পনা আরও উসকে দিয়েছে। এরই মাঝে নাইডুর কাছে আইটি নোটিশটি এসেছে।
ওই নোটিশে জানানো হয়েছে, “এই মামলাটি আয়কর দফতরে জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই কর আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। আয়কর আইনের 153C নং ধারায় এই নোটিশ জারি করা হয়েছে এবং ইতিমধ্যেই কর আদায়ের প্রক্রিয়া চলছে।” শো-কজ নোটিশে আরও বলা হয়েছে, চন্দ্রবাবু নাইডুর কাছে যে কয়েককটি জাল চুক্তির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার বেহিসেবি আয় এসেছে, তা প্রমাণ করার জন্য আয়কর দফতরের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আয়কর আইনের 153C নং ধারা আয়কর দফতরকে কোনও দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কর আদায়ের প্রক্রিয়া শুরু করার অনুমতি দেয়, যদি সেই দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে অপরাধমূলক কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন