নতুন করে আর তেমন কিছু দেওয়ার নেই। ক্ষমতায় থাকার সময় সীমাও শেষের দিকে। সে কথা ভেবে এখন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া গোষ্ঠীকে ‘বাড়তি’ গুরত্ব দিতে রাজি নয় গেরুয়া শিবির। ফলে বেজায় চাপে সিন্ধিয়া গোষ্ঠী।
চলতি বছরের শেষে মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। ইতিমধ্যে আসরে নেমে পড়েছে ক্ষমতাসীন বিজেপি ও বিরোধী দল কংগ্রেস। দু’ই পক্ষের মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আর, এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবিরে প্রায় কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে আসা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও তাঁর গোষ্ঠী।
২০১৮ সালে প্রায় ১৫ বছর পর সরকার গঠন করে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী হন কমল নাথ। কিন্তু, ২০২০ সালে মার্চ মাসে ২২ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন কংগ্রেসের জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। পাশাপাশি আরও চার কংগ্রেস বিধায়ক যোগ দেন বিজেপিতে। ‘অপারেশন লোটাস’-এর ফলে পড়ে যায় কমলনাথের সরকার।
এরপর, ২০২০ সালের জুলাই মাসে সরকার গঠন করে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী হন শিবরাজ সিং চৌহান। এ সময় মন্ত্রিসভায় শপথ নেওয়া ২৮ জন মন্ত্রীর মধ্যে ১২ জনই ছিলেন সিন্ধিয়ার অনুগত। যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন - তুলসী সিলাওয়াত, গোবিন্দ সিং রাজপুত, মহেন্দ্র সিং সিসোদিয়া, প্রভুরাম চৌধুরী, প্রদ্যুম্ন সিং তোমর, বিসাহুলাল সিং, হরদীপ সিং ডাং, রাজবর্ধন সিং, ওপিএস ভাদোরিয়া, ব্রজেন্দ্র সিং যাদব প্রমুখ।
একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, সকল ‘দলবদুল’ বিধায়ক নিজেদের বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ফাঁকা কেন্দ্রগুলিতে আবার উপনির্বাচন হয়। ২০২০ সালের নভেম্বরে বিজেপির টিকিটে জয়লাভ করেন ‘দলবদলু’ ১৯ জন। আর, উপনির্বাচনে হেরে যান সিন্ধিয়া গোষ্ঠীর ৭ জন বিধায়ক। যারা হলেন - ইমারতি দেবী, রঘুরাজ সিং কাসানা, গিরিরাজ ডান্ডোটিয়া, আদাল সিং কাসানা, রণবীর জাটভ, মুন্নালাল গয়াল এবং জাসমন্ত জাটাভ।
তবে এখন, বিধানসভা নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে শাসক ও ক্ষমতা-বিরোধীতার মুখোমুখি হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। একইসঙ্গে, দেখা দিয়েছে দলের অন্দরে ফাটল। পুরানো বনাম নতুনদের লড়াই। বিজেপি সূত্রের খবর, সিন্ধিয়া অনুগত মন্ত্রীদের বেশিরভাগরেই পারফরম্যান্স রিপোর্ট খুব একটা ভালো নয়। তাঁদেরকে নিয়ে বেজায় অসন্তুষ্ট বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব।
এই পেক্ষাপটে সিন্ধিয়ার অনুগতদের মধ্যে কতজনকে আবার টিকিট দেবে বিজেপি, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। জানা যাচ্ছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে টিকিটের জন্য রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের উপর নিরলসভাবে চাপ তৈরি করছে সিন্ধিয়ার অনুগতরা। তবে, সেই চাপকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন শীর্ষ নেতারা। তাঁরা জানাচ্ছেন, এ নিয়ে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নেবে।
তবে, এই পরিস্থিতিতে বেশিরভাগ সিন্ধিয়া অনুগতদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কারণ, বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছে যে টিকিট দেওয়া হবে শুধুমাত্র সমীক্ষা এবং জয়ের সম্ভাবনার ভিত্তিতে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন