ভারতে উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে বেকারত্বের সংখ্যা। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (CMIE)'র সমীক্ষা জানাচ্ছে, করোনা মহামারী শুরুর আগে অর্থাৎ ২০১৯ সালের শেষে দেশে বেকারত্বের গড় হার ছিল ৭.৬ শতাংশ। কিন্তু, সেই হার চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর, বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.২ শতাংশে। ঠিক ১৭ দিন পর, গত ১৮ ডিসেম্বর, সেই বেকারত্বের হার আরও বেড়ে হয়েছে ৯.১ শতাংশ।
সিএমআইই আরও জানিয়েছে, ২০২২ সালের নভেম্বর, ভারতে মোট বেকারত্বের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫.১ কোটি। ২০২০ সালে করোনা মহামারীর প্রথম বছরে লকডাউনে যখন দেশছুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছিলেন, কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলো অর্থনীতি, তখনও বেকারের মেট সংখ্যা ছিলো ৫.৩ কোটি। অর্থাৎ, লকডাউন পরবর্তী সময়েও দেশে বেকারের সংখ্যা কমাতে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছে মোদী সরকার। যেটুকু কমেছে তা যৎসামান্য।
একই ছবি দেশের শ্রমশক্তির ক্ষেত্রেও। সিএমআইই'র সমীক্ষায় জানা যাচ্ছে, ২০২২ সালেও ভারতের শ্রমশক্তি মহামারী-পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরতে পারেনি। ২০১৯ সালে দেশে শ্রমশক্তি ছিল মোটামুটি ৪৪.২ কোটি। মহামারীর প্রথম বছরে এই সংখ্যা মারাত্মকভাবে কমে যায়। ২০২২ 'র নভেম্বরে ভারতের শ্রমশক্তি দাঁড়িয়েছে ৪৩.৭ কোটি, যা মহামারীর আগের সময়ের চেয়ে কম।
গত ৫ বছরে ভারতে বেকারত্বের হার বেড়েছে ধারাবাহিকভাবে। সিএমআইই'র তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে দেশে বেকারত্বের গড় হার ছিল ৩.৪ শতাংশ।২০১৯ সালের শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭.৪ শতাংশ। ২০২০ সালে সেই হার ১০ শতাশের উপরে চলে যায়। মাঝে, ২০২১ সালে বেকারত্বের হার কিছুটা কমলেও, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মাঝামাঝি পৌঁছেছে ৯.১ শতাংশে, যা ২০১৯'র গড় হারের চেয়ে বেশি।
এ প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা জানাচ্ছেন, করোনা মহামারীর লকডাউনে বেনজির পরিস্থিতিতে বেকারত্বের উচ্চহারে খানিকটা স্বাভাবিকতা থাকলেও, চলতি ডিসেম্বরের গুরুতর তথ্য দেশের বেকার যুবক-যুবতীদের মনে আশঙ্কা বাড়াবে।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে দৈনিক বেকারত্বের হার পর্যালোচনা করে সিএমআইই (CMIE) জানিয়েছে, ১ ডিসেম্বর বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছিল ৮.২ শতাংশ। পরবর্তী ১৬ ডিসেম্বর বেকারত্বের হার আরও বেড়ে হয়েছে ৯.৩ শতাংশ।
ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ শহরাঞ্চলে বেকারত্বের বর্ধিত হার ছিল ৯.৯৬ শতাংশ, আর গ্রামীন এলাকায় বেকারত্বের হার ছিল প্রায় ৮.৭০ শতাংশ। যেখানে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশে বেকারত্বের গড় হার ছিল ৭.৯ শতাংশ। অর্থাৎ, তথ্য অনুসারে দেশে বেকারের সংখ্যা উচ্চহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন