তিস্তা শীতলবাদের গ্রেফতারির আঁচ গিয়ে পড়লো রাষ্ট্রসংঘে। তিস্তার বিরুদ্ধে পুলিশি ব্যবস্থাগ্রহণ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রসংঘের এক আধিকারিক তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিস্তার গ্রেফতারি নিয়ে তিনি সরব হলেন ট্যুইটারে।
গুজরাট দাঙ্গা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর পুলিশ শনিবার তিস্তাকে গ্রেপ্তার করে। এক প্রতিবাদী মুখকে এইভাবে হেনস্থার শিকার হতে দেখে দেশের বিভিন্ন মহল থেকে নিন্দার ঝড় বইছে। সেই বিষয়ে ট্যুইটারে তীব্র ধিক্কার জানালেন রাষ্ট্রসংঘের আধিকারিক মেরি লওলর। তিনি বলেন, বৈষম্য ও ঘৃণার বিরুদ্ধে কঠোর এক কন্ঠস্বর তিস্তা। মানবাধিকার রক্ষা করা কোনও অপরাধ নয়।
তিস্তার গ্রেফতারির আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে বলেন, তিনি কোর্টের রায় শুনেছেন। দাঙ্গার পর তিস্তা বা তাঁর এনজিওর তরফ থেকে সিটকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিল । সেই সমস্ত কিছু সুপ্রিম কোর্টের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। তাই কোর্ট নরেন্দ্র মোদীকে ক্লিনচিট দিয়েছে। কোর্টের তরফ থেকে এও বলা হয় ট্রেনে আগুন লাগানোর পর তৎকালীন সরকার শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করেছিল। ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো দাঙ্গা বাধানো হয়নি।
উল্লেখ্য, তিস্তার বিরুদ্ধে এফআইএর করা হয় গুজরাট পুলিশের পক্ষ থেকে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯৪ (মিথ্যা প্রমাণ দেওয়া বা জাল করা), ২১১ (ঘটনার মিথ্যা অভিযোগ), ২১৮ (জনপ্রতিনিধির বিরুদ্ধে ভুল তথ্য প্রদান), ৪৭১ (ভুল নথি সত্য বলে চালানো) এবং ১২০বি (অপরাধী মূলক ষড়যন্ত্র) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
গুজরাট পুলিশের অ্যান্টি টেরর স্কোয়াড শনিবার মুম্বাইতে তিস্তাকে গ্রেফতার করে। পরে রাতের দিকেই তাঁকে আহমেদাবাদে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। তিস্তা ছাড়াও গুজরাট পুলিশের প্রাক্তন ডিজি আর বি শ্রীকুমার এবং সাসপেন্ডেড আইপিএস সঞ্জীব ভাটের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁরা ২০০২ গুজরাট দাঙ্গার প্রসঙ্গিত তথ্য বিকৃত করেছেন।
তিস্তা শীতলাবাদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও ধিক্কার জানানো হয়েছে। রবিবার কলকাতার রাজপথে বামফ্রন্টের ডাকে বিশাল নাগরিক মিছিল সংগঠিত হয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, বাদশা মৈত্র সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন