উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বিশ্ববিদ্যালয়ে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠলো বিজেপি ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-এর বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্টার-সহ একাধিক আধিকারিককে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের উদ্ধার করতে আসা পুলিশকর্মীদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ঘরের মাঠ গোরক্ষপুরের দীনদয়াল উপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন রেজিস্টার অজয় সিং-সহ আরও অনেকে। পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ছাত্র সংগঠনের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গিয়েছে।
গত প্রায় দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও গোটা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিল দীনদয়াল উপাধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজেপি ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি)-এর সদস্যরা। কয়েকদিন আগে উপাচার্যের কুশপুতুল পুড়িয়েও প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দেখায় তারা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, কয়েকদিন ধরেই এই বিষয়ে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিল সংগঠনের সদস্যরা। কিন্তু কর্তৃপক্ষের শীর্ষ আধিকারিকরা তা নাকচ করে দেন। শুক্রবার এই নিয়ে এবিভিপি সদস্যরা ক্ষোভে ফেটে পড়লে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়।
এদিন সংগঠনের সদস্যরা প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ভাঙচুর শুরু করে। ভাঙচুরের পাশাপাশি লুঠপাটেরও অভিযোগ উঠেছে। এরপর উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকেও ভাঙচুর চালানো হয়। উপাচার্য, রেজিস্টার, ছাত্র কল্যাণ সমিতির ডেপুটি ডিন-সহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাধিক শীর্ষ আধিকারিককে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে সংগঠনের সদস্যরা। গোটা ঘটনার একটি ভিডিও সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মারের চোটে গুরুতর অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রেজিস্টার অজয় সিং।
খবর পেয়ে আধিকারিকদের উদ্ধার করতে আসা পুলিশদেরও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এরপর ধীরে ধীরে পুলিশের বিশাল বাহিনী এসে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে।
ছাত্র সংগঠনের দাবি, তাদের কথা শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত সমস্যার দ্রুত সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছিলেন উপাচার্য। কিন্তু তিনি তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করেননি বলেই এমন আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এই নিয়ে থানায় কোনোরকম অভিযোগ না জানালেও পুলিশ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় অভিযুক্ত প্রায় ১০জন এবিভিপি সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার ভিডিও সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গোটা দেশ এই ঘটনার তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন