উত্তরপ্রদেশের এক স্কুলে মুসলিম ছাত্রকে সহপাঠীদের দ্বারা চড় মারার ঘটনায় অল্ট নিউজের প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবেইরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলো পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় শিশুটির পরিচয় প্রকাশ করার অভিযোগে এই ফ্যাক্ট চেকারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার মুজাফফরনগর পুলিশ জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের ধারা ৭৪ (শিশুদের পরিচয় প্রকাশের উপর নিষেধাজ্ঞা) এর অধীনে মহম্মদ জুবেইরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে।
শুক্রবার জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের প্রধান প্রিয়াঙ্ক কানুনগো ওই ভাইরাল ভিডিও শেয়ার না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। শিশুর পরিচয় প্রকাশ করাকে ‘অপরাধ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। জুবেইর সেই হাজার হাজার নেটিজেনদের একজন, যিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মুসলিম পড়ুয়ার সহপাঠীদের দ্বারা মার খাওয়ার ভিডিও শেয়ার করেছেন।
এই এফআইআর দায়ের প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ফ্যাক্ট চেকার জুবেইর জানিয়েছেন, “আমি পুলিশের কাছ থেকে এখনও কোনও নোটিশ বা কল পাইনি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি যে আমার বিরুদ্ধে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। আমি এফআইআরের কপি দেখছিলাম। এতে অন্য কোনও নাম নেই। শুধু আমার নাম কেন রাখা হলো? আমার আগে এবং পরেও বেশ কয়েকটি মিডিয়া আউটলেট ভিডিওটি পোস্ট করেছিল। আমি নাবালকের পরিচয় প্রকাশ করছি, এটা আমাকে জানানোর পরেই আমি ভিডিওটি সরিয়ে দিয়েছি। ২০২০ সালেও আমার সাথে এমনটি ঘটেছে। আমাকে টার্গেট করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে পুলিশ যে কাউকে টার্গেট করতে পারে।"
বিষ্ণু দত্ত নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে জুবেইরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এফআইআরে বলা হয়েছে, “২৫ আগস্ট নেহা পাবলিক স্কুলের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। অল্ট নিউজের সাংবাদিক মহম্মদ জুবেইর ভিডিওতে ভিকটিম শিশুটির পরিচয় প্রকাশ করেছেন বলে আমার নজরে এসেছে। এটি জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের অধীনে শিশুর অধিকার লঙ্ঘন, যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।”
উল্লেখ্য, ৪০ সেকেন্ডের ওই ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষিকা চেয়ারে বসে রয়েছেন। শিক্ষিকার পাশে মুসলিম ছাত্রটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তাকে অন্য পড়ুয়ারা পর পর এসে মেরে যাচ্ছে। এমনকি, শিক্ষিকা এক ছাত্রকে তিরস্কারও করেন মুসলিম পড়ুয়াটিকে যথেষ্ট জোরে না মারার জন্য। এবং মুসলিম ছাত্রটি এক নাগাড়ে কেঁদে যাচ্ছে। (পিপলস রিপোর্টার এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি)।
তৃপ্তি ত্যাগী নামের অভিযুক্ত এই শিক্ষিকা এই ঘটনাকে সামান্য ছোট ঘটনা বলে উল্লেখ করেছেন এবং এর জন্য তিনি লজ্জিত নন বলেও জানিয়েছেন। শিক্ষিকার বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন