প্রত্যেক মাসে সব শিক্ষিকার 'ঋতুকালীন ছুটি'র দরকার। এই দাবিতে এবার সরব হলেন উত্তরপ্রদেশের শিক্ষিকারা। তাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মাত্র ৬ মাস আগে গঠিত 'উত্তরপ্রদেশ মহিলা শিক্ষক সঙ্ঘ'। রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলির শৌচাগারের অবস্থা শোচনীয়। তাই এই দাবি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রী, জেলায় জেলায় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে ছুটির প্রয়োজনীয়তা বোঝাচ্ছেন সংগঠনের প্রতিনিধিরা। রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও তাঁর সাক্ষাৎ করবেন বলে স্থির হয়েছে।
ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশের ৭৫টি জেলার মধ্যে ৫০টিতে শাখা তৈরি হয়েছে শিক্ষিকাদের এই সংগঠনটির। ‘ঋতুকালীন ছুটি’ কেন দরকার? শনিবার সংগঠনের সভানেত্রী সুলোচনা মৌর্য জানালেন তাঁদের সমস্যার কথা। তিনি নিজে বরাবাঁকি জেলার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। জানালেন, বেশিরভাগ স্কুলেই ২০০-৪০০ পড়ুয়ার সঙ্গে একই শৌচাগার ব্যবহার করতে হয় শিক্ষিকাদের। শৌচাগারগুলি পরিষ্কার হয় না বললেই চলে। শৌচাকর্ম এড়াতে অনেকেই জল কম খান। ফলস্বরূপ মূত্রনালিতে সংক্রমণের হচ্ছে তাঁদের। অনেক শিক্ষিকাই স্কুলের পাশের মাঠে যান। অনেককে প্রতিদিন ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরের প্রত্যন্ত স্কুলে যেতে হয়। কাজেই, ঋতুকালীন পরিস্থিতিতে প্রচুর অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয় তাঁদের।
শিক্ষিকাদের জন্য পৃথক সংগঠন গড়ার প্রয়োজন কেন হল? মৌর্য বলেন, প্রাথমিক স্কুলগুলির ৬০ শতাংশ টিচারই মহিলা। এতদিন বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনে নামেই শিক্ষিকাদের প্রতিনিধি হিসাবে রাখা হত। সংগঠনগুলি আসলে চালাতেন পুরুষরাই। তাঁরা কোনওদিনই মহিলাদের এই দাবি (ঋতুকালীন ছুটি) কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেননি। যদিও মহিলাদের জন্য বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই নতুন সংগঠন তৈরি হয়। এখন মহিলাদের সমস্যার বিভিন্ন ইস্যু উত্থাপন করা সম্ভব হবে।
ঘটনাচক্রে, উত্তরপ্রদেশের মহিলা শিক্ষক সংগঠনের এই প্রচার এখন ট্রেন্ডিং ট্যুইটারেও। ‘পিরিয়ড লিভ’ হ্যাশট্যাগে চলছে প্রচার। বিহারে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব মহিলাদের জন্য দু’দিনের এই ‘ঋতুকালীন ছুটি’ ঘোষণা করেছিলেন। সুলোচনা মৌর্য বলেন, 'কিন্তু আমরা চাই, উত্তরপ্রদেশে তিনদিনের ছুটি দেওয়া হোক।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন