উত্তর ও পূর্ব ভারতে বেড়েছে ডেঙ্গির প্রকোপ। সেইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লেটলেটের চাহিদা। আর, এই সুযোগে যোগীর রাজ্যে শুরু হয়েছে ভুয়ো প্লেটলেট বিক্রির চক্র।
শনিবার, প্রয়াগরাজ থেকে 'ভুয়ো' প্লেটলেট বিক্রির অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে কোতোয়ালি ও প্রয়াগরাজ পুলিশের 'স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ' (SoG)।
এর আগে, গত বৃহস্পতিবার, এক ডেঙ্গি রোগীকে প্লেটলেটের বদলে মোসাম্বি লেবুর রস (Mosambi Juice) দেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রয়াগরাজে এক বেসরকারী হাসপাতালের বিরুদ্ধে। তারপর সেই রোগীর মৃত্যুর জেরে হাসপাতালটি 'সিল' করার নির্দেশ দেন উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক (Brajesh Pathak)।
সেই খবরের রেশ কাটতে না কাটতেই- প্রয়াগরাজে ডেঙ্গি রোগীদের পরিবারকে 'প্লেটলেট' বলে 'রক্তরস' বা প্লাজমা বিক্রির অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
প্রয়াগরাজের জেলা পুলিশ সুপার শৈলেশ পান্ডে (Shailesh Kumar Pandey) জানান, 'আমরা এই ব্যক্তিদের প্রয়াগরাজে প্লেটলেট হিসাবে ফলের রস বিক্রি করা হচ্ছে কি না, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কিন্তু তারা বলেছে না, তেমনটা ঘটছে না। প্লাজমাকে প্লেটলেট বলে চালানো হচ্ছে।'
তিনি জানান, 'সাম্প্রতিককালে ডেঙ্গি খুব বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়েছে, প্লেটলেটের চাহিদাও বেড়েছে। এই ব্যক্তিরা তারই সুযোগ নিচ্ছিল এবং দরিদ্র মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছিল। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, কিছু নগদ টাকা, মোবাইল ফোন, যানবাহন এবং প্লাজমার পাউচ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।'
একইসঙ্গে, মোসাম্বির রস কাণ্ড প্রসঙ্গে এদিন জেলা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন 'প্যাকেটে ফলের রস ছিল কি না, তা এখনও প্রমাণিত হয়নি। সেই তরলের নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফল আসার পরই সঠিক চিত্রটা জানা যাবে।' 'ফলের রস'-এর তত্ত্ব, এখন পর্যন্ত শুধু সোশ্যাল মিডিয়ার চর্চাতেই রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রকৃতপক্ষে এই ঘটনার একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিয়োতে তরলটিকে ফলের রস বলেই দাবি করা হয়েছে। এরপরই হাসপাতালটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রোগীকে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু, তাঁর অবস্থার ক্রমশ অবনতি হয় এবং তাঁর মৃত্যু হয়। এই ঘটনাটির বিষয়ে অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, দিন কয়েক আগেই প্রয়াগরাজে অবৈধ উপায়ে রক্ত সরবরাহের অভিযোগে ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এই জালিয়াতি ব্যবসার পিছনে বড় কোনও চক্র রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন