যোগীর রাজ্যে প্রায় ১৬০০ জন প্রাথমিক শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী করোনা সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। তারমধ্যে সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে গিয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষক সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। এমনই তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি ডক্টর দীনেশচন্দ্র শর্মা। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ১৬২১ জন প্রাথমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মাত্র ৮-১০ জনের মৃত্যু হয়েছে হৃদরোগে।
এক বিবৃতিতে তিনি জানান, নির্বাচনের তৃতীয় পর্যায় পর্যন্ত ৭০৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু চতুর্থ পর্যায় এবং গণনা পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ১৬০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। শিক্ষক সংগঠন জানিয়েছে, এই বিষয় নিয়ে ১ মে মুখ্য সচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়। তাতে শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে, শরীর খারাপ হলে তাঁদের ছুটি দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবটা আসলে অন্য। যাঁরা অসুস্থ, ভোটের ডিউটিতে যেতে পারেননি, তাঁদের হয় সাসপেন্ড করা হয় অথবা বেতন কেটে দেওয়া হয়। এমনকী শিক্ষকদের বাড়িতে থেকে কাজ করার কথাও বলা হয়েছিল। অথচ লখনউ, উন্নাও, রায়বেরেলি, বস্তি, হরদই জেলায় শিক্ষকদের কোভিড কন্ট্রোল রুমের কাজ করতে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি সরকারের মন্ত্রী তথা উত্তরপ্রদেশের প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রী। তিনি জানান, নির্বাচনের দরুন মাত্র তিনজন শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে করোনা আক্রান্ত হয়ে। নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন তুলে তাঁর যুক্তি, ভোটগ্রহণের সরঞ্জাম নিয়ে ভোটকেন্দ্রের দিকে যাওয়া থেকে শুরু করে সরঞ্জাম জমা দেওয়া পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে মৃত্যু হলে সেটাকে ভোটের ডিউটিতে প্রাণ হারানো বলে ধরা হয়। শিক্ষকদের মৃত্যু হতে পারে কিন্তু ভোটের ডিউটি করতে এসে সংক্রমিত হয়েছেন, তা মানতে চান না তিনি।
পুলিশ, কৃষক, সাধারণ মানুষের পাশাপাশি সংক্রমিত হয়ে শিক্ষকদেরও মৃত্যু হচ্ছে। এমনও হতে পারে আগে থেকে ওই ব্যক্তি সংক্রমিত হন, কিন্তু উপসর্গহীন ছিলেন। সেক্ষেত্রে কী করে ভোটের ডিউটি করতে গিয়ে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু বলে ধরা যেতে পারে! তাঁর বক্তব্য, এই অভিযোগ ভুয়ো এবং ভিত্তিহীন। বিরোধীরা নোংরা রাজনীতি করছে।
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশের শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে মৃত শিক্ষকদের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। যদিও তা সরকার মানবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন