এক দলিত ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে উত্তরপ্রদেশ। আউরাইয়া জেলায় এক স্কুল শিক্ষকের প্রহারে স্কুল ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় আন্দোলনে নেমেছেন মৃতের পরিবার, সাধারণ মানুষ সহ ভীম আর্মি এবং সমাজবাদী পার্টির নেতা-কর্মীরা।
দশম শ্রেণীর দলিত ছাত্র নিখিত দোহরের মৃত্যুর পর কেটে গিয়েছে প্রায় ২৪ ঘন্টা। যদিও অভিযুক্ত শিক্ষক অশ্বানি সিং (Ashwani Singh) এখনও অধরা। তাঁকে ধরতে পারেনি পুলিশ-প্রশাসন। সেই ক্ষোভে জেলাশাসকের দফতরের সামনে পাথর ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্দোলনকারীরা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে একাধিক গাড়ি সহ জেলাশাসকের গাড়ি এবং পুলিশ ভ্যান।
এদিকে, পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে আউরাইয়া জেলা শিক্ষা বিভাগ। পাশাপাশি, অভিযুক্ত শিক্ষক অশ্বানি সিং-এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার, আউরাইয়া পুলিশ সুপার চারু নিগম জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ড বিধির (IPC) একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। পলাতক ওই শিক্ষককে গ্রেপ্তারের জন্য তিনটি দল গঠন করা হয়েছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর, সমাজ বিজ্ঞানের পরীক্ষায় বানান ভুল করে দশম শ্রেণীর দলিত ছাত্র নিখিত দোহরে। অভিযোগ, এই ‘অপরাধে’ রড দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন অশ্বানি সিং।
ঘটনা প্রসঙ্গে এক ট্যুইট বার্তায় সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব বলেন, আউরিইয়াতে শিক্ষকের হাতে মার খেয়ে এক ছাত্রের মৃত্যু শুধু দুঃখজনকই নয়, খুবই সংবেদনশীল ঘটনা। সরকার এই বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করুক এবং নিহত ছাত্রের পরিবারের পাশে দাঁড়াক। শিক্ষা জীবন দেয়, নেয় না।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে নিহত দলিত ছাত্রের বাবা রাজু দোহরে বলেন, ‘১৩ সেপ্টেম্বর সামাজিক বিজ্ঞানের পরীক্ষা নেন শিক্ষক অশ্বানি সিং। আমার ছেলে ওএমআর (OMR) শিটে একটির পরিবর্তে দুটি বাক্স কালো করে 'সামাজিক' (সামাজিক) পরিবর্তে 'সমাজক' লিখেছিল। এতে বিরক্ত হয়ে আমার ছেলের চুল ধরে তাকে নির্দয়ভাবে মারধর করেন অশ্বানি সিং। যতক্ষণ না সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে, ততক্ষণ তাঁকে মারধন করেন শিক্ষক।’
তিনি বলেন, 'এক বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর জ্ঞান ফিরে পায় নিখিত। তবে, শ্বাসকষ্ট কমেনি। চিকিৎসকরা জানান, শরীরের অভ্যন্তরে আঘাত (Internal Injury) পেয়েছে নিখিত। এরপর সোমবার, তাঁকে সাইফাইতে নিয়ে যাওয়ার সময়- অ্যাম্বুলেন্সে মারা যায় সে।' টানা, ৯ দিনের লড়াইয়ের পর অবশেষে প্রাণ হারায় দশম শ্রেণীর ছাত্র নিখিত।
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে নিখিতের বাবা দাবি করেন, অশ্বানীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাঁকে দলিত বলে গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দেন ওই অভিযুক্ত শিক্ষক। এরপর, ২৪ সেপ্টেম্বর, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে FIR করেন নিখিতের বাবা রাজু দোহরে।
-with IANS inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন