এখনও উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গের ভিতরে দিন কাটছে ৪১ শ্রমিকের। আটদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত তাঁদের বের করে আনা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারের জন্য আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তাই এবার পাইপলাইনের মাধ্যমে শ্রমিকদের জন্য শুকনো খাবারের পাশাপাশি ভাত-রুটি-সবজি পৌঁছে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। রবিবার দুর্ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী ও কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়করি। উদ্ধারকাজ পরিদর্শন শেষে গড়করি জানান, “সব ঠিকঠাক থাকলে আর ২-৩ দিনের মধ্যে উদ্ধার সম্ভব হবে।”
আটদিন আগে গত রবিবার ভোররাতে সাড়ে ৫টা নাগাদ উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর সিল্কিয়ারা থেকে ডন্ডালগাঁও পর্যন্ত নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের একাংশ হঠাৎই ভেঙে পড়ে। সুড়ঙ্গের প্রায় ২৬০ মিটার গভীরে আটকে পড়েন বাংলার তিন শ্রমিক-সহ মোট ৪১ জন শ্রমিক।
তাঁদের উদ্ধারের জন্য ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জাতীয় ও উত্তরাখণ্ডের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ইন্দো-টিবেটান পুলিশ, বর্ডার রোডওয়েজ বাহিনী। সুড়ঙ্গের ছাদ থেকে শক্ত পাথুরে জমি খুঁড়ে শ্রমিকদের বের করে আনার জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল অত্যাধুনিক ‘অগার’ মেশিনও। কিন্তু ছাদের জমি বারবার ধসে পড়ায় সব পরিকল্পনাই ভেস্তে গিয়েছে।
সুড়ঙ্গের মধ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হচ্ছে বলে রবিবার জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গড়করি। তাঁর বক্তব্য, অক্সিজেন পাঠানোর সরু পাইপ দিয়েই শুকনো খাবার, যাবতীয় রসদ ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র পাঠানো হচ্ছে শ্রমিকদের কাছে।
গড়করি আরও জানিয়েছেন, নরম মাটিতে শক্তিশালী যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে শ্রমিকদের বের করে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু হিমালয়ের ভূমি খুবই ধসপ্রবণ হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। ছাদের শক্ত স্তর খুঁড়তে গিয়ে বারবার ধস এসে পরিকল্পনা ভেস্তে দিচ্ছে। তবে সুড়ঙ্গের ভেতরের ছাদ ও ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খুব অল্প ফাঁকা জায়গা রয়েছে। সেখান দিয়ে সুড়ঙ্গের ভিতরে রোবট পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে।
অন্যদিকে, আটকে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। তার কথা মতো শনিবার রাত থেকেই প্রধানমন্ত্রীর দফতর ও উদ্ধারকাজে নিযুক্ত অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলির শীর্ষকর্তারা সিল্কিয়ারাতেই রাত কাটাচ্ছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, পাহাড় খুঁড়ে সুড়ঙ্গের ছাদ ভেদ করে আটকে থাকা শ্রমিকদের বের করে আনার গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তেল ও গ্যাস উত্তোলনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ওএনজিসিকে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন