২০১৬ সালে কেন্দ্রের নোট বাতিলের পদক্ষেপকে সমর্থন করেছে সুপ্রিম কোর্টে, এই যুক্তি ঠিক না। কারণ, নোট বাতিল প্রক্রিয়া সম্পর্কে রায় দিয়েছে শীর্ষ আদালত, ওই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল কিনা- তা নিয়ে কোনও মতামত দেয়নি পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। মঙ্গলবার, এক বিবৃতিতে এমনই দাবি করেছে সিপিআই(এম) পলিট ব্যুরো।
বিবৃতিতে সিপিআই(এম) দাবি করেছে, ‘নোটবাতিলের পদক্ষেপ সঠিক, সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায়ের এমন ব্যাখ্যা দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের একমাত্র আইনি অধিকারের প্রশ্নের ব্যাখ্যা দিয়েছে এবং বলেছে যে ওই পদক্ষেপ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ১৯৩৪ সালের আইনের ২৬(২) ধারা মোটেই লঙ্ঘন করেনি।’
'সংখ্যাগরিষ্ঠের রায় উল্লেখ করেছে যে, নোটবাতিলের সঙ্গে যে উদ্দেশ্যে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাওয়া হয়েছিল তার সঙ্গে যুক্তিপূর্ণ যোগসূত্র থাকলেও লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে কি হয়নি, তা প্রাসঙ্গিক নয়।'
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে - ‘পাঁচ বিচারপতির মধ্যে যিনি ভিন্নমত পোষণ করেছেন তিনি স্পষ্টই বলেছেন, ওই ধারাতেই বলা আছে যে রিজার্ভ ব্যাঙ্কেরই সরকারকে নোটবাতিলে উদ্যোগী হওয়ার সুপারিশ করা উচিত। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারই। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে একমাত্র মতামত চাওয়া হয়েছিল। পলিট ব্যুরো মনে করে, ওই সিদ্ধান্ত রূপায়ণের আগে সংসদের অনুমোদন নেওয়া উচিত ছিল।’
'পলিট ব্যুরো মনে করে, সুপ্রিম কোর্টের সংখ্যাগরিষ্ঠের রায় সরকারের সিদ্ধান্তের আইনি অধিকারকেই বজায় রেখেছে। এর পরিণতি নিয়ে কিছু বলেনি। নোটবাতিল ভারতের বিপুল অসংগঠিত অর্থনীতি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছে। অথচ এই ক্ষেত্রই রুটিরুজি জোগায় কোটি কোটি মানুষের। ক্ষুদ্রশিল্প, অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পক্ষেত্রকে সম্পূর্ণ পঙ্গু করে দিয়েছে। বিপুল পরিমাণ মানুষের রুটিরুজি ধ্বংস করেছে। রিপোর্টেই উল্লেখ আছে যে, ২০১৬ সালে নোটবাতিল ঘোষণার এক মাসের মধ্যে প্রাণ হারান ৮২জন।'
'এছাড়া, ওই ধ্বংসাত্মক সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি হিসাবে দাবি করা হয়েছিল যে, এর ফলে কালো টাকা উদ্ধার হবে এবং বিদেশি ব্যাঙ্ক থেকে তা ফিরিয়ে আনা যাবে, জালনোট বন্ধ হবে, সন্ত্রাসবাদীদের অর্থ জোগান বন্ধ করে দেওয়া যাবে, দুর্নীতি প্রতিরোধের পাশাপাশি অর্থনীতিতে নগদ অর্থের লেনদেন কমিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে।'
'বাস্তবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টই জানাচ্ছে, জনগণের হাতে নোট বাতিলের আগে ছিল ১৭.৭ লক্ষ কোটি টাকা। আর এখন সেই অর্থ পৌঁছে গিয়েছে ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি টাকায়। অর্থাৎ নোট বাতিলে জনগণের হাতে অর্থের জোগান বেড়েছে ৭১.৮৪ শতাংশ।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন