আরও সংকটে হিমাচল প্রদেশের কংগ্রেস সরকার। বুধবার সকালে মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিক্রমাদিত্য সিং। তাঁর অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু দলীয় বিধায়কদের উপেক্ষা করছেন।
মঙ্গলবার হিমাচল প্রদেশে একটি মাত্র রাজ্যসভা আসনে ভোট হয়। কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকা স্বত্বেও এই আসনে জয়ী হয় বিজেপি। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিরুদ্ধে আস্থাভোটের দাবি জানিয়ে রাজ্যপাল শিবপ্রতাপ শুক্ল-র সঙ্গে দেখা করেন বিরোধী দলনেতা জয়রাম ঠাকুর। এই আবহে কংগ্রেস সরকারের সঙ্কট আরও বারিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলে মন্ত্রিত্ব ছাড়লেন রাজ্যের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের ছেলে বিক্রমাদিত্য সিং।
মিডিয়ার সামনে বিক্রমাদিত্য বলেন, “আমাদের পিছনের দিকে ফিরে তাকাতে হবে এবং দেখতে হবে এই পরিস্থিতি কেন তৈরি হয়েছে। আমি আপনাদের কিছু ঘটনা মনে করিয়ে দিতে চাই। ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচন প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিং-এর নামেই যে এই ভোট হয়েছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এমন কোনও ব্যানার বা পোস্টার ছিল না, যেখানে তাঁর ছবি ছিল না।“
তিনি বলেন, "গত এক বছরে, আমি সরকারের কাজকর্ম নিয়ে একটি কথাও বলিনি। কিন্তু এখন কথা বলা আমার দায়িত্ব। মন্ত্রিত্ব আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। গুরুত্বপূর্ণ হল হিমাচলের মানুষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক, আস্থার সম্পর্ক। সরকার বিধায়কদের অবহেলা করে কাজ করছে। তাঁদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে।"
রাজ্যের যুবকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিও পূরণ করছে না সরকার বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর বাবা, রাজ্যের ৬ বারের মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিং-কে অবহেলা করেছে বর্তমান সরকার বলেও অভিযোগ। তিনি বলেন, "আমি ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছি যে এই রাজ্য সরকার মাল রোডে এক টুকরো জমি খুঁজে পায়নি, যেখানে যাঁর নামে আমরা সরকার গঠন করেছি, তাঁর একটি মূর্তি স্থাপন করা যাবে। আমার প্রয়াত বাবাকে এই সম্মান দেখিয়েছে এই সরকার।"
ঘটনাচক্রে, নির্বাচনে কংগ্রেস জয়ী হওয়ার পর সুখবিন্দর সিংকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রথম দাবিদার হিসেবে বিক্রমাদিত্য সিংয়ের মা তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রতিভা সিংকে দেখা হচ্ছিল।
মঙ্গলবার রাজ্যসভা ভোটে কংগ্রেসের অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন বিজেপির হর্ষ মহাজন। ৬৮ সদস্যের বিধানসভায় দু’পক্ষই ৩৪টি করে ভোট পাওয়ায় লটারির মাধ্যমে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হয়। অথচ বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়ক রয়েছে ৪০। এ ছাড়া তিন জন নির্দল বিধায়ক কংগ্রেস সরকারকে সমর্থন করছেন। অন্য দিকে, বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ২৫। অর্থাৎ, সরকার পক্ষের ন’জন বিধায়ক বিজেপি প্রার্থীকে হর্ষকে ভোট দিয়েছেন। এরপরই বিজেপি দাবি তুলেছে, লোকসভা ভোটের আগেই হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেস সরকারের পতন ঘটবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন