সুপ্রিম কোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ার পরও দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে বুলডোজার চালিয়ে বেশকিছু বসতি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় বিজেপির কড়া সমালোচনায় সরব হল বিরোধীরা। কিন্তু ঘটনাস্থলে না যাওয়ায় সমাজের বিভিন্ন অংশের মানুষ ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিরোধী নেতাদের দিকে। বুলডোজারের মুখে দাঁড়ানো সিপিআই(এম) পলিটব্যুরোর সদস্য বৃন্দা কারাতের ছবি দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন করছেন - বাকিরা কোথায়?
অন্যদিকে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টি (AAP) সরকারিভাবেই বিজেপির সুরে বাংলাদেশী, রোহিঙ্গা এবং অবৈধ নির্মাণের তত্ত্ব দিয়েছে। প্রশাসনিক স্তরে এই যুক্তিতেই রাতারাতি নোটিফিকেশন ছাড়াই বুলডোজার চালিয়েছে বিজেপি পরিচালিত উত্তর দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন।
রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তীর মিছিলের নামে মুসলিম মহল্লায় মসজিদের সামনে তীব্র উত্তেজনা তৈরি করে আরএসএস-বিজেপি অনুগামী উগ্র-হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। উত্তেজনা গড়ায় সংঘর্ষে। এরপর দাঙ্গাবাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ঘোষণা করে একতরফা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় মুসলিম সংখ্যালঘুদের বসতি, বাসস্থান। ঘোষণা করা হয় সব নির্মাণ অবৈধ এবং বসবাসকারী সবাই অনুপ্রবেশকারী।
মধ্যপ্রদেশের খরগোনের পর একই মডেলে অপারেশন চলে জাহাঙ্গীরপুরীতেও। বুধবার ঘটনাস্থলে ছিলেন শুধু বামপন্থীরা। সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রতিলিপি নিয়ে বাধা দেন তাঁরা। সঙ্গে ছিলেন কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা, সিপিআইএমএলের দিল্লি রাজ্য সম্পাদক রবি রায়।
সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সরাসরি অধীন দিল্লি পুলিশ। এই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। আইন রক্ষকরা বারবার আইন ভাঙলে ছেড়ে দেওয়া যায় না।
কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যে বলেন, গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ভারতের সাংবিধানিক মূল্যবোধ। সংখ্যালঘুদের আক্রমণের নিশানা করা হচ্ছে। নিজেদের মনে যে ঘৃণা জমিয়ে রাখা, বিজেপির উচিত তাতে বুলডোজার চালানো। সরব হন শিল্পী, অভিনেতা, লেখকদের একটা অংশ। অভিনেত্রী রিচা চাড্ডা বৃন্দা কারাতের ছবি দেওয়া একটি পোস্টে মন্তব্য করেন - 'বাকিরা কোথায়'?
জনৈক এক ট্যুইটার ব্যবহারকারী লেখেন - "আজ জাহাঙ্গীরপুরীতে শুধুমাত্র বৃন্দা কারাত এবং হান্নান মোল্লা। বিরোধী দল কোথায়? আর জাহাঙ্গীরপুরীতে কেউ গেল না কেন? তারা সবাই কি টুইট করতে ব্যস্ত ছিল?" অন্য আর এক জন লিখেছেন - "ভারতের কত সুন্দর সব বিরোধী দল, সবাই তাদের ঘর/অফিস থেকে বিবৃতি দিচ্ছে। শুধুমাত্র বৃন্দা কারাত দিল্লির গরম উপেক্ষা করে ঘটনাস্থলে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন