আবগারী নীতি মামলায় ধৃত দিল্লির প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা আপ নেতা মনীশ সিসোদিয়ার জামিন মামলায় গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ চেয়ে তদন্তকারী সংস্থা ইডির উদ্দেশে পরপর প্রশ্নবান ছুঁড়ে দেয় শীর্ষ আদালত।
এদিন আদালত জানায়, “মনীশ সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে এখনও তথ্যপ্রমাণের কোনও সূত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আপ নেতার বিরুদ্ধে তদন্তকারী সংস্থার কাছে এই মামলাতেই আরেক অভিযুক্ত ব্যবসায়ী দীনেশ অরোরার বয়ান ছাড়া আর কিছুই নেই।” পাশাপাশি, আর্থিক দুর্নীতি মামলাতেও সিসোদিয়ার নাম টানা নিয়েও ইডিকে এদিন প্রশ্ন করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
বৃহস্পতিবার দিল্লির আবগারী নীতি মামলায় ধৃত মনীশ সিসোদিয়ার জামিনের আবেদন মামলার শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চ ইডিকে প্রশ্ন করে, “আপনারা টাকার দুটি সংখ্যার কথা বলছেন, ১০০ কোটি এবং ৩০ কোটি। কিন্তু অভিযুক্ত (সিসোদিয়া) কার কাছ থেকে ওই টাকা পেয়েছেন? ওই টাকা তো তাকে যে কেউ দিতে পারে। ওই টাকা যে মাদক সংক্রান্ত টাকা, সেটা তো বাধ্যতামূলক নয়! প্রমাণ কোথায়? দীনেশ অরোরার বয়ান ছাড়া আর কোনও প্রমাণ আছে কি? দীনেশ অরোরা তো এই মামলায় নিজেই একজন অভিযুক্ত। ওটা ছাড়া আর প্রমাণ কোথায়? অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এখনও তার মানে তথ্যপ্রমাণের সূত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি।”
আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ, "ইডির অভিযোগ মাদক সংক্রান্ত ১০০ কোটি ও ৩০ কোটি টাকা পেয়েছিলেন দিল্লির প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া। কিন্তু সেই টাকা যে মাদক সংক্রান্ত, সেই বিষয়ে কোনও নিখাদ প্রমাণ নেই।"
শীর্ষ আদালতকে সেই সময় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, সিসোদিয়ার সঙ্গে লেনদেন এতটাই গোপনে হয়েছে যে প্রমাণের সূত্র প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছে না। কিন্তু আদালত পাল্টা ইডি ও সিবিআইয়ের উদ্দেশে বলে, “কিন্তু এখানেই তো আপনাদের কর্মদক্ষতার প্রকাশ পাওয়া উচিত। লেনদেন যতই গোপনে হোক, তার প্রমাণ তো চাই।”
আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিসোদিয়ার নাম যোগ করা নিয়েও এদিন ইডিকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করে শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ। আপ নেতার বিরুদ্ধে পিএমএলএ (Prevention of Money Laundering Act: PMLA)-এর আওতায় মামলা দায়ের করা নিয়ে বিচারপতি খান্না প্রশ্ন করেন, “মনীশ সিসোদিয়া এই মামলার মধ্যে কোথাও নেই। বিজয় নায়ার (আরেক অভিযুক্ত) রয়েছেন কিন্তু সিসোদিয়া তো এই মামলার অংশ নন। তাহলে আপনারা কীভাবে আর্থিক দুর্নীতি আইনের আওতায় তার নামে মামলা দায়ের করলেন?” এই মামলার শুনানি আপাতত আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন