গত শুক্রবার আবগারি দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপর রবিবার এক দলীয় সভায় তিনি ঘোষণা করেন, আগামী দু'দিনের মধ্যেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন তিনি। এরপরেই আম আদমি পার্টির অন্দরে তো বটেই, জাতীয় রাজনীতিতেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন?
রবিবার আপ প্রধান কেজরীওয়াল ঘোষণা করেন, “দু’দিন পরে আমি মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেব। যত দিন না জনতা জনার্দনের রায় পাচ্ছি, তত দিন আমি এই আসনে আর ফিরব না।”
সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার সঙ্গে নিজের বাসভবনে এই নিয়ে বৈঠকে বসেছেন কেজরীওয়াল।
এক নজরে দিল্লির আগামী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যে যে নামগুলি উঠে আসছে -
অতিশী মারলেনাঃ আপের জাতীয় মুখপাত্র অতিশী। দিল্লি কালকাজির বিধায়ক, ৪৩ বছর বয়সী অতিশী বর্তমানে দিল্লি সরকারের শিক্ষা, PWD, সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দিল্লির প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার গ্রেফতারির পর তিনি মন্ত্রী হন এবং দলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। এক সময়ে অতিশী মণীশ সিসোদিয়ার উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করেছেন।
সৌরভ ভরদ্বাজঃ গ্রেটার কৈলাশ থেকে তিনবারের বিধায়ক সৈরভ ভরদ্বাজ। তিনি দিল্লি জল বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং ২০২৩ সালের ৯ মার্চ থেকে স্বাস্থ্য, নগর উন্নয়ন ও জল মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে মন্ত্রিত্বগুলি অতিশীকে দেওয়া হয়। তবে কেজরী, সিসোদিয়া গ্রেফতার হওয়ার পর তিনি জাতীয় রাজনীতিতে এবং জনসাধারণের কাছে দলের অবস্থান স্পষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
রাঘব চাড্ডাঃ ৩৫ বছর বয়সী রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চাড্ডা আপের কার্যনির্বাহী এবং রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য। রাঘব দিল্লির জল বোর্ডের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০২২ সাল পর্যন্ত তিনি রাজেন্দ্র নগরের বিধায়ক ছিলেন। এরপর তিনি রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। পাশাপাশি, ২০২২ সালে পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
কৈলাশ গেহলটঃ ৫০ বছর বয়সী কৈলাশ গেহলট পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি নাফাজগড় বিধানসভার বিধায়ক এবং দিল্লির বিধানসভার ক্যাবিনেট মন্ত্রী। এই মুহূর্তে দিল্লির পরিবহন ও পরিবেশ মন্ত্রক সামলাচ্ছেন তিনি।
সঞ্জয় সিংঃ আপের জাতীয় মুখপাত্র সঞ্জয় সিং রাজ্যসভার সদস্য। পাশাপাশি, দলের জাতীয় নির্বাহী ও রাজনৈতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরার জন্য তিনি নিয়মিত দলের মিডিয়া ইন্টারঅ্যাকশনেও রয়েছেন। ২০২৩ সালে দিল্লির আবগারি দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তবে বর্তমানে তিনি জামিনে মুক্ত।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি শেষ হচ্ছে দিল্লির বিধানসভার মেয়াদ। অর্থাৎ এক বছর পর বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও রবিবার কেজরীওয়াল ঘোষণা করেন মহারাষ্ট্রের ভোটের সঙ্গে অর্থাৎ নভেম্বরেই ভোট হতে চলেছে রাজধানীতে। সুতরাং যিনিই মুখ্যমন্ত্রী হোন না কেন, তিনি অল্প কয়েক দিনের জন্যই সেই পদে থাকবেন। সেকারণে আপের শীর্ষ নেতৃত্ব এমন কাউকে চাইছে, যিনি মূল বিষয়গুলিতে দলের অবস্থানকে স্পষ্ট করতে পারেন এবং যাঁর আমজনতার মধ্যে ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন
