তামিলনাড়ুর কাল্লাকুরিচি জেলায় বিষমদ পান করে মৃত্যু হয়েছিল ৬৫ জনের। এই ঘটনায় রাজ্য সরকার মৃতের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করে। এই ক্ষতিপূরণের তীব্র বিরোধিতা করে মাদ্রাজ হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার শুনানিতে রাজ্যের কাছে এই বিপুল ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চায় আদালত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এখানে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অত্যন্ত বেশি।
শুক্রবার এই সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি আর মহাদেবন এবং বিচারপতি মোহাম্মদ শফিকের ডিভিশন বেঞ্চে। শুনানিতে বেঞ্চ জানায়, “বিষমদ খেয়ে মৃতরা স্বাধীনতা সংগ্রামী নন। এমনটাও নয় যে, তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা বা সমাজকর্মী ছিলেন, যাঁরা সাধারণ জনগণের জন্য বা সমাজের স্বার্থে প্রাণ হারিয়েছেন। এরা বিষ মদ খেয়ে একটি বেআইনি কাজ করেছে।“
এই বিষয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন মোহম্মদ ঘৌসের নামের এক ব্যক্তি। তাঁর আবেদন ছিল, মদ খাওয়া একটি বেআইনি কাজ। এই মদ খেয়ে বেআইনি কাজ করেছে তারা। তাই তাদের প্রতি রাষ্ট্রের করুণা করা উচিত নয়।
তিনি আদালতে আরও জানান, রাজ্য সরকার অগ্নিকাণ্ড বা অন্য কোনও দুর্ঘটনার শিকারদের জন্য কম ক্ষতিপূরণ দেয় আর সেখানে বিষমদকাণ্ডে মৃতদের পরিবারের জন্য বিশাল পরিমাণ অর্থ প্রদান করছে। কিসের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত, তা পরিষ্কার নয়।
সরকারি আইনজীবীকে বিচারপতির প্রশ্ন, সরকার কীভাবে কাল্লাকুরিচিতে বিষমদ খেয়ে মারা যাওয়া ৬৫ জনের পরিবার পিছু ১০ লাখ টাকা করে দিতে পারে? কোনও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হলে সরকার এই ধরনের ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে পারে, তা ন্যায়সঙ্গতও। কিন্তু যারা বেআইনি মদ খাচ্ছে, তাদের জন্য কেন? এটা দেখে অন্যরা উৎসাহিত হতে পারেন।
দুই সপ্তাহ পর এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, জুন মাসে তামিলনাড়ুর কাল্লাকুরিচি জেলায় বিষমদ খেয়ে মৃত্যু হয় ৬৫ জনের। পুলিশ সূত্র অনুসারে ওই মদে বেশি মাত্রায় মিথানল মেশানো হয়েছিল। এই ঘটনায় মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল তামিলনাড়ু সরকার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন