গুজরাটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফর চলাকালীন ঝুলন্ত সেতু ভেঙে মৃত্যু হয় প্রায় ১৪১ জনের, আহত প্রায় শতাধিক। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করলেও এখনও ঘটনাস্থলে যাননি প্রধানমন্ত্রী। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে স্ট্যাচু অব ইউনিটিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে গিয়েছেন তিনি। দুর্ঘটনাস্থল থেকে মাত্র কয়েক ঘণ্টা দূরে থেকেও কেন সেখানে গেলেন না প্রধানমন্ত্রী? স্ট্যাচু অব ইউনিটিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা কি স্বজন হারানোদের পাশে দাঁড়ানোর থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ? এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
যদিও প্রধানমন্ত্রীর কথায় তিনি নিজের কর্তব্য করছেন। সোমবার সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে গুজরাটের কেভাদিয়ায় স্ট্যাচু অব ইউনিটিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করার পর নরেন্দ্র মোদী বলেন, "বর্তমানে আমি একতা নগরে আছি। কিন্তু আমার মন পড়ে আছে মোরবিতে। আমার জীবনে এইরকম যন্ত্রণা আমি খুবই কম অনুভব করেছি। একদিকে রয়েছে ব্যথায় ঘেরা হৃদয়, অন্যদিকে রয়েছে কর্তব্য।"
তিনি আরও জানান, "দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। সরকার শোকাহত পরিবারগুলির পাশে আছে। গতকাল থেকেই উদ্ধার ও ত্রাণ কার্য শুরু হয়েছে। কেন্দ্র রাজ্যকে সব ধরনের সাহায্য করছে। দুর্ঘটনার তদন্ত করতে রাজ্যের তরফে একটি কমিটি তৈরী করা হয়েছে।"
প্রধানমন্ত্রী জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, আহতরা যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, সেখানেও সজাগ রয়েছে কর্তৃপক্ষ। সাধারণ মানুষ যাতে ন্যূনতম সমস্যার সম্মুখীন না হয় তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে হাসপাতালগুলিকে।
শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ১৭৭ জন মানুষের প্রাণ বাঁচানো গেছে। এঁদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। ব্রিটিশ আমলের তৈরি সেতুটি সংস্কারের জন্য ৭ মাস যাবৎ বন্ধ ছিল। স্থানীয় পৌরসভার প্রধান সন্দীপসিংহ জালার কথায়, "সেতুটি খোলার আগে ফিটনেস সার্টিফিকেট নেয়নি ওরেভা কোম্পানি, যারা সেতুটির সংস্কারের কাজ করছিল।"
তাহলে রাতারাতি দর্শকদের জন্য কেন খুলে দেওয়া হল ঝুলন্ত সেতু? ছট পুজার মাধ্যমে গুজরাটবাসী বিহারীদের মন জয় করার জন্য? এই ধরণের নানান প্রশ্ন ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপিকে লাগাতার নিশানা করছে বিরোধীরা। গুজরাটের এই ঘটনায় অবিলম্বে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে আম আদমি পার্টি (AAP)।
উল্লেখ্য, বিজেপি শাসিত গুজরাট এবং হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। তবে, হিমাচলে নির্বাচন এবং ভোট গণনার দিন ঘোষণা হলেও, গুজরাটে তা হয়নি। বিরোধীদের অনুমান, নরেন্দ্র মোদীর গুজরাট সফরের পরই নির্বাচন এবং ফলাফলের দিন ঘোষণা করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন