বিজেপির ধর্মান্ধদের ঘৃণ্য মন্তব্যের জন্য দেশ হিসেবে ভারত কেনো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইবে? নূপুর শর্মা বিতর্কে পশ্চিম এশীয় দেশগুলিতে ওঠা নিন্দার ঝড় প্রসঙ্গে এভাবে কেন্দ্র এবং বিজেপিকে আক্রমণ করলেন টিআরএস নেতা কে টি রামা রাও। তাঁর দাবি, দেশ নয়, বিজেপি ক্ষমা চাক রাজনৈতিক দল হিসেবে। তবে সবার প্রথমে দেশবাসীর কাছে বিজেপিকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন তিনি।
এদিন সকালে নিজের টুইটারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ট্যাগ করে কেটিআর লেখেন, "নরেন্দ্র মোদী জী, বিজেপির ধর্মান্ধদের ঘৃণ্য মন্তব্যের জন্য কেনো দেশ হিসেবে ভারতকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে? এখানে বিজেপিরই ক্ষমা চাওয়া উচিত, দেশ হিসেবে ভারতের নয়। তারও আগে দিনের পর দিন ঘৃণা ছড়ানোর জন্য আপনার দলের উচিত প্রত্যেক ভারতীয়র কাছে ক্ষমা চাওয়া।"
এর পরের একটি টুইটে বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা সিং ঠাকুরের কয়েকটি বিতর্কিত মন্তব্যের খবরের স্ক্রিনশট পোস্ট করে তেলেঙ্গানার মন্ত্রী লেখেন, "মোদী জী, আপনার নীরবতা আমাদের হতবাক করে দিয়েছিল যখন বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিং মহাত্মা গান্ধীকে হত্যার প্রশংসা করেছিলেন। আপনাকে মনে করিয়ে দিই স্যার, আপনি যা প্রচার করতে চান, আপনি তাইই অনুমোদন করেন। এই যে ধর্মান্ধতা এবং ঘৃণাকে উপরমহল থেকে নিরঙ্কুশ সমর্থন করা হচ্ছে, এটি ভারতের অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হবে।"
কে টি আর ছাড়াও অন্যান্য বিরোধী নেতারাও নূপুর শর্মা বিতর্কে কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন। কংগ্রেস নেতা পবন খেরাও কে টি আরের ভাষাতেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, "ভারত কোনো ভুল করেনি যে ভারতকে ক্ষমা চাইতে হবে। ভুল করেছে বিজেপি। দেশ কেনো ক্ষতিপূরণ দেবে? প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর রাজধানীর কথা কাতার কুয়েত মনে করিয়ে দিচ্ছে। আমাদের দেশের কাছে এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে?"
বিএসপি নেত্রী মায়াবতী টুইটারে লিখেছেন, "কোনো ধর্মের প্রতি আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করা ঠিক নয়। এক্ষেত্রে বিজেপির উচিত তার লোকেদের কঠোর ভাবে শাস্তি দেওয়া। কেবল বহিষ্কার করলে হবে না, কঠোর আইনের অধীনে তাঁদের জেলে ঢোকানো উচিত।"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এক সপ্তাহ আগে একটি টিভি চ্যানেলে মহম্মদ নবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। তাঁর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে দাঙ্গার ঘটনা ঘটে। দেশের বাইরেও এর প্রভাব পড়েছে। ইরান, কাতার, কুয়েত, সৌদি আরবের সরকার সে সব দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন