২১ জুলাইয়ের মঞ্চেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় সিপিআইএম। সিপিআইএমের আমলে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। সিপিআইএম নেতাদের আত্মীয়রা সরকারী চাকরি পেয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
শিক্ষক, স্বাস্থ্য, দমকল সহ একাধিক বিভাগে নিয়োগ দুর্নীতিতে জর্জরিত তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকার। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগের তীর শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের দিকে। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলাও চলছে। এবার তৃণমূলের শহীদ দিবসের মঞ্চে এই প্রসঙ্গে সরব হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিআইএম এবং সিপিআইএম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য, যিনি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে চাকরিপ্রার্থী মামলাকারীদের হয়ে লড়ছেন, তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করলেন মমতা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, বাম আমলে ১০ থেকে ১৫ লাখে এক একটা চাকরি বিক্রি হতো। তিনি বলেন, "সব ব্যাপারে গদ্দারদের ছেলেমেয়েদের চাকরি দিতে হবে। গদ্দারবাবুরাই শুধু চাকরি পাবে আর সাধারণরা পাবে না? বাম আমলে কোনও চাকরি হয়েছিল? ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি করেছিল। নাম বলে কাউকে ছোট করবো না। সিপিআইএমের একটা কাগজ রয়েছে। দেখবেন তাতে যাঁরা সাংবাদিক, তাঁদের সবার স্ত্রী শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছিলেন। কীভাবে পেলেন? তাঁরা কী কোয়ালিটিতে পেয়েছিলেন? ছেলেরা পার্টি করবে আর বউদের চাকরি দেওয়া হবে, এই নিয়ম ছিল সিপিআইএমে। আমরা জানি এগুলো।"
বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, "সিপিআইএমের বিকাশ বাবু, রোজ গিয়ে বলছে (আদালতে) এর নাম কেটে দাও, ওর নাম কেটে দাও। নিজেকে সাধু পুরুষ দেখাতে চাইছে। যেন ভাছা মাছ উলটে খেতে জানে না। আপনাদের সময় কাদের বার্থ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন? আদৌ তাঁরা ব্যর্থ সার্টিফিকেট পাওয়ার যোগ্য? সেই ফাইলটা একটু বার করব? কী বলেন! বলেছিলাম, বদলা নয়, বদল চাই। তাই কিছু করিনি। এটা মাথায় রাখবেন।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা শিক্ষক নিয়োগ করতে চাই। কোর্টে কেস চলছে তাই। তা নাহলে ১৭ হাজার পোস্ট এখনও রেডি আছে। দফতরও তৈরি। আদালতে মামলা চলছে বলে করতে পারছি না। আমরা চাই চাকরি হোক, ওরা চায় চাকরি না হোক। তাই ওরা কুটুস কুটুস করে কামড় দিচ্ছে। বলছে এখানে ভুল। আমি যদি তোমার রেল, কোল ইন্ডিয়া, সিভিল এভিয়েশন ধরি? তোমরা সেখানে কী করেছ? তোমরা কী সাধু পুরুষ?"
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মামলা লড়ায় এর আগেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় পড়েছিলেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। আসানসোলে এক দলীয় কর্মীসভায় মমতা বলেছিলেন, "চাকরি প্রার্থীদের প্রতি আমার সহমর্মিতা আছে। বিকাশ রাজনীতি করবেন, পালিয়ে যাবেন। বিজেপি রাজনীতি করবে, পালিয়ে যাবে। কিন্তু আমি ছেলেমেয়েদের চাকরি নিয়ে রাজনীতি করবো না।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন