শুধু টাকার পাহাড় নয়, ভুয়ো ভোটারেরও পাহাড় কলকাতায়! কমিশনে তালিকা জমা CPIM-এর

ইন্দ্রজিৎ ঘোষ জানান, 'এ শুধু হিমশৈলের চূড়ামাত্র! ভুয়ো ভোটারের খোঁজ এখনো চালু আছে এলাকায়। ভবিষ্যতে আবারও ভুয়ো ভোটার খুঁজে দেওয়া হবে।'
কমিশনে ভুয়ো ভোটারের তালিকা জমা সিপিআইএমের
কমিশনে ভুয়ো ভোটারের তালিকা জমা সিপিআইএমের ছবি সৌজন্যে সোশ্যাল মিডিয়া
Published on

ভোটার লিস্ট নির্ভুল এবং ত্রুটিমুক্ত করতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে ডেপুটেশন জমা দিল CPIM কলকাতা জেলা কমিটি। শুধু তাই নয়, কলকাতার ২৬,৭৭৩ জন মৃত ভোটারের তালিকা ও ৭,৪০১ স্থানান্তরিত ভোটারের তালিকাও কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে CPIM নেতৃত্ব।

সোমবার, মৃত ভোটারের তালিকা কমিশনে জমা দেয়ার আগে সিপিআই(এম) কলকাতা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেন, 'অল-পার্টির মিটিংয়ে দাবী করা হয়েছিল, ভোটার লিস্ট ত্রুটিমুক্ত করতে হবে। সেজন্য ডেড (মৃত) ভোটার এবং শিফটেড (স্থানান্তরিত) ভোটার, যারা এখানে থাকেন না, তাঁদের নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিতে হবে। যাদের নাম ওঠেনি, তাঁদের নাম তুলতে হবে। কিন্তু, গত কয়েক বছর ধরে এই কাজ করেনি নির্বাচন কমিশন। বুথে বুথে নামগুলি থেকে যাচ্ছে।'

তিনি জানান, 'ডেড ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আমরা কলকাতা জেলার প্রায় ৪ হাজার বুথের মধ্যে থেকে ৯১৩ টি বুথের স্যাম্পেল (নমুনা) সংগ্রহ করে এনেছি। যার মধ্যে ২৬ হাজার ৭৭৩ টি ডেড (মৃত) ভোটার। এবং ৩০৬ টি বুথের ৯৭৪ জন শিফটেড (স্থানান্তরিত) ভোটার, যারা এখানে থাকেন না।'

কমিশনের প্রতি ক্ষোভ উগরে এদিন কল্লোল মজুমদার বলেন, 'এই কাজটি নির্বাচন কমিশনের করার কথা ছিল, তাঁরা করছে না। এই সবকটি বুথ কলকাতা কর্পোরেশনের মধ্যে। কলকাতা কর্পোরেশনের বার্থ এন্ড ডেড রেজিস্ট্রেশন (জন্ম এবং মৃত্যু নথিভুক্তিকরণ) পোর্টাল আছে। সেই পোর্টাল থেকে নির্বাচন কমিশন যদি তথ্য নেয়, তাহলে জেনারালি (সাধারণত) ডেড ভোটার বাদ যাওয়ার কথা। কিন্তু, সেই কাজ নির্বাচন কমিশন করছে না।'

তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধান জায়গা। সব দলের ঊর্ধ্বে কমিশন।’

এ দিন CPIM-র কলকাতা জেলার প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিটু (CITU) নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ। তিনি জানান, ‘মৃত এবং বোগাস (ভুয়ো) ভোটারদের নাম ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দিতে হবে। এই দাবি আমরা জানিয়ে আসছি।’

সিটু নেতার অভিযোগ, ‘এটি সারাবছর এবং সামারি রিভিশনে (ফাইনাল তালিকা) নির্বাচন কমিশনের কাজ। গত ৮ বছর ধরে আমরা এই ধরণের ফর্ম জমা দিয়ে আসছি। কিন্তু, ডেলিবারেটলি (Deliberately) সেই নামগুলি ভোটার লিস্টে রেখে দেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে, শাসক দলের গুন্ডা-মাস্তানির মাধ্যমে ভোটের দিন সকাল সকাল এই জাল ভোট ফেলে দেওয়ার জন্য। আর, এটাকে নিয়ে বেশিরভাগ বুথে নির্বাচনের দিন অশান্তি তৈরির মতো পরিস্থিতি হয়। একথা সর্বদলীয় বৈঠকে আমরা বলে গিয়েছিলাম।'

ইন্দ্রজিৎ ঘোষ জানান, 'আজকে আমরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে যায়নি। তাঁকে বার বার বলার পরেও, তিনি যখন একাজ করছেন না, আমরা তখন CEO-র কাছে সর্বদলীয় বৈঠকে দাবী তুলেছিলাম। এবং, সেই মোতাবেক এক মাস কাজ করে- প্রায় ৯১৩ টি বুথ থেকে ২৬,৭৭৩ টি ডেড ফর্ম এবং বাকি ৯৭৪ টি শিফটেড ফর্ম আমরা হাতে-কলমে নিয়ে এসেছি। এর প্রত্যেকটা ভেরিফায়েড (পরীক্ষিত) এবং জেনুইন (নির্ভুল)।’     

তিনি দাবি করেন, 'এ শুধু হিমশৈলের চূড়ামাত্র! ভুয়ো ভোটারের খোঁজ এখনো চালু আছে এলাকায়। ভবিষ্যতে আবারও ভুয়ো ভোটার খুঁজে দেওয়া হবে।'

কমিশনে ভুয়ো ভোটারের তালিকা জমা সিপিআইএমের
SSC Scam: ২১০০০ পদে নিয়োগে দুর্নীতি! 'কাউকে ছাড়া হবে না' - হুংকার বিচারপতি বসুর

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in